কলকাতা: ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন আগেই। এবার রাজনীতির মঞ্চে প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। বহরমপুর থেকে তাঁকে প্রার্থী করল জোড়াফুল শিবির। রবিবার ব্রিগেডে 'জনগর্জন' সভা থেকে তাঁর নাম ঘোষণা করল তারা। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন খোদ ইউসুফ। মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় খোদ নিজের দলের প্রার্থীকে জনগণের সামনে নিয়ে আসেন। (TMC Lok Sabha Candidature)
ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার ইউসুফ। ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ দলে শামিল ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে একদিনের বিশ্বকাপ জয়ী দলেও শামিল ছিলেন। IPL ক্রিকেটে ভারতীয় হিসেবে দ্রুততম শতরানেরও মালিক। এবার রাজনীতির মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন। ইউসুফের নাম ঘোষণা করে একেবারে চমকই দিয়েছে তৃণমূল। কীর্তি আজাদের নাম আগে থেকে শোনা গেলেও, ইউসুফ জোড়াফুল শিবিরের প্রার্থী হতে পারেন, তা আঁচই করতে পারেননি কেউ। (Yusuf Pathan)
মুর্শিদাবাদের বহরমপুর আসনে ইউসুফকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ওই আসনে ইউসুফকে পাঠানোও যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বহরমপুর বরাবরই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর গড় হিসেবে পরিচিত, যাঁর সঙ্গে ইদানীং কালে তৃণমূল নেতৃত্বের সম্পর্ক তিক্ত থেকে তিক্ততর হয়ে উঠেছে। তাই ওই আসনে তারকা প্রার্থীকে পাঠিয়ে তৃণমূল কগ্রেসকে কড়া বার্তা দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: TMC Lok Sabha Candidature: হুগলিতে তৃণমূলের প্রার্থী রচনা, মুখোমুখি লড়াই লকেটের সঙ্গে
এ বছর লোকসভা নির্বাচনে জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সঙ্গে I.N.D.I.A জোটে শামিল রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু বাংলায় আসন সমঝোতা করতে গিয়ে বিপত্তি দেখা দেয়। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ ওঠে, আসন সমঝোতা নিয়ে ঢিলেমির পর গোঁয়ার্তুমি করছে কংগ্রেস। রাজ্যে খুঁটি নড়বড়ে হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ১০-১২টি আসন দাবি করছে তারা, যা জোডাফুল শিবিরের পক্ষে মানা অসম্ভব। আসন সমঝোতায় না পৌঁছতে পারার কারণ হিসেবে অধীরকেও দায়ী করেন কেউ কেউ।
কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে তৃণমূল গড়ার পরও হাতশিবিরের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল মমতার। এমনকি বামেদের হটিয়ে বাংলায় ক্ষমতায় আসার পরও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকার চালিয়েছেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে বাংলায় কংগ্রেসের জমি যত হালকা হয়েছে, ততই আধিপত্য বিস্তার করেছে তৃণমূল। সময়ের সঙ্গে দুই দলের সম্পর্কও তিক্ত হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, মমতাকে লাগাতার আক্রমণ করে গিয়েছেন অধীর। এমনকি বাংলায় আসন সমঝোতায় অধীরই বাধা হয়ে দাঁড়ান বলে অভিযোগ করে জোড়াফুল শিবির। যে কারণে শেষ পর্যন্ত বাংলায় একা লড়াইয়ের ঘোষণা করেন মমতা। তাই বহরমপুরে ইউসুফকে দাঁড় করিয়ে অধীরের প্রতি নিজেদের অবস্থান তৃণমূল আরও স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।