হুগলি: লোকসভা নির্বাচনে হুগলিতে জয়ী হলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachna Banerjee)। তিনি ৫ লক্ষ ৭০ হাজার ৯৭৬ ভোট পেয়েছেন তিনি। ৫১ হাজার ৬৫৪ ভোটে বিজেপি-র লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন রচনা। ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে হুগলিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন লকেট। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন সিপিএম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষ। তিনি ১ লক্ষ ১০ হাজার ১৬৭ ভোট পেয়েছেন। (Hooghly Loksabha Election Result)
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রটি বহুলচর্চিত আসনে পরিণত হয়। লকেটকে প্রার্থী করা নিয়ে বিজেপি-র অন্দরে যেমন ক্ষোভ ছিল, তেমনই অভিনেত্রী রচনাকে সেখানে প্রার্থী করে চমক দেয় তৃণমূল। অভিনয় জগতের পরিচিত মুখ লকেট এবং রচনার মুখোমুখি লড়াই ঘিরেও সরগরম হয় রাজ্য রাজনীতি। লকেট যদিও নিজের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসীই ছিলেন এযাবৎ।
তবে প্রচারপর্বে সেখানে পদে পদে সমালোচনার মুখে পড়েন রচনা। ‘ধোঁয়া’ দেখে শিল্পের জয়গান করে, ঘাস খাওয়া গরুর দইয়ের প্রশংসা করে সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিদ্রুপের শিকার হন নায়িকা। পাশাপাশি ‘দিদি নং ১’-এ সুযোগ করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রচনা প্রচার করছেন বলেও অভিযোগ করে বিজেপি। শেষ মেশ হুগলিতে জয়ী হলেন রচনা।
কৃষি এবং শিল্পের সমন্বয়ে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত জেলা হুগলি। ১৯৫২ সালের প্রথম লোকসভা নির্বাচনে হুগলিতে জয়ী হয়েছিলেন হিন্দু মহাসভার নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৯৫৭ সালে সেখানে খাতা খোলে সিপিএম। প্রভাত কর, বিজয়কৃষ্ণ মোদক এবং রূপচাঁদ পালের হাত ধরে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সেখানে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল সিপিএম-এর। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত কংগ্রেসের দখলে ছিল হুগলি। রূপচাঁদ পালের হাত ধরে আবারও ১৯৮৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা ছিল সিপিএম-এর হাতে।
২০০৯ সালে তৃণমূলের রত্না দে হুগলিতে জয়ী হন। পর পর দু’বার হুগলি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানকারী লকেটকে হুগলিতে প্রার্থী করে বিজেপি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে চুঁচুড়া থেকেও বিজেপি-র হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন লকেট। সেই সময় থেকেই তাঁকে নিয়ে অসন্তোষ ধরা পড়ে বিজেপি-র অন্দরে। এবারের লোকসভা নির্বাচনেও সেই রেশ চোখে পড়ে।