ময়নাগুড়ি: লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একযোগে তীব্র আক্রমণ করলেন বিজেপি এবং কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে। অভিষেকের দাবি, বিজেপি-র বহিরাগত নেতারা বাংলাবিরোধী। বাংলার বিজেপি নেতারাই কেন্দ্রকে মানুষের প্রাপ্য টাকা আটকে রাখতে বলেছেন। মানুষের টাকা আটকে রেখে বাংলাকে ভাতে মারার চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করলেন অভিষেক। (Abhishek Banerjee)
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে সভা করেন অভিষেক। সেখানে প্রাপ্য অধিকারকে সামনে রেখে ভোটদানে আহ্বান জানান সাধারণ মানুষকে। এ প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় নির্মিত রামমন্দিরের উল্লেখ করেন তিনি। অভিষেক বলেন, "নিজেদের অধিকারকে সামনে রেখে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। ২০১৯ সালে অধিকারকে সামনে রেখে ভোট দিয়েছিলেন কি? আপনারা ভোট দিয়েছিলেন রামমন্দিরকে সামনে রেখে। ৩০০০ কোটি টাকা খরচ করে রামমন্দির হয়েছে। কিন্তু আপনার বাড়ির ছাদের টাকা মেলেনি। কারণ আপনারা অধিকারকে সামনে রেখে ভোট দেননি।" (Lok Sabha Elections 2024)
প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, মানুষের সমর্থনেই তাঁরা ক্ষমতায় আসেন, মানুষ চাইলে সব ঔদ্ধত্য় গুঁড়িয়ে যেতে পারে বলেও এদিন মন্তব্য করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, "গণতন্ত্রে মানুষ শেষ কথা বলেন। আমরা যাঁরা মঞ্চে রয়েছি, আমাদের মূল্য শূন্য। কেউ বিধায়ক, কেউ সাংসদ, কেউ মন্ত্রী, কেউ পঞ্চায়েত সদস্য, কেউ মুখ্যমন্ত্রী, কেউ প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। মানুষ যেদিন চাইবেন না, কোনও নেতার ক্ষমতা নেই সিবিআই-ইডি দিয়ে মানুষের টাকা আটকে রাখে। সব ঔদ্ধত্য ভেঙে চুরমার হতে পাঁচ মিনিট লাগবে না।"
কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের তুলনা টেনে অভিষেক জানান, ২০২১ সালে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে সামনে রেখে ভোট দিয়েছিলেন বাংলার মানুষ। রাজ্যের সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার করে দেখিয়েছে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকাকে সামনে রেখে ভোট দিতে বলেছিলেন তিনি। রাজ্য সরকার সেই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেও নিজেদের অধিকারকে সামনে রেখে ভোট দিতে সকলকে আহ্বান জানান অভিষেক।
এদিন অভিষেক জানান, তৃণমূল হোক বা বিজেপি, সিপিএম হোক বা কংগ্রেস, মানুষ যাঁকে ইচ্ছে ভোট দিতে পারেন। কিন্তু নিজের অধিকারপ থেকে সরলে চলবে না। অভিষেক জানান, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে বিজেপি-র সাংসদ রয়েছে। এই তিন জেলায় প্রায় ৭০০০ বুথ রয়েছে। অথচ গত পাঁচ বছরে একটি বুথেও উন্নয়নকে সামনে রেখে কোনও পর্যালোচনার বৈঠক হয়নি। বাংলাকে আবাস যোজনার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে বড় বড় বিজ্ঞাপন দিলেও, ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার কোনও টাকা গত তিন বছরে মোদি সরকার দেয়নি বলে এদিন ঘোষণা করেন অভিষেক। শ্বেতপত্র প্রকাশ করতেও কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন তিনি।