রুমা পাল, কলকাতা: লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election) প্রথম দফায় অশান্তি। দ্বিতীয় দফায় হিংসা রুখতে সতর্ক নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। ২৬ এপ্রিলের ভোটের নিরাপত্তায় থাকছে ২৭২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রথম দফার নির্বাচনে কোচবিহারে একাধিক জায়গায় গন্ডগোলের ছবি সামনে এসেছে। CEO দফতরে বারবার বেজেছে অ্যালার্ম।
ওয়েবকাস্টিংয়ে ধরা পড়ে বুথেও গন্ডগোল হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ক্যুইক রেসপন্স টিমের সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৭০ কোম্পানি। দক্ষিণ দিনাজপুরে থাকছে ৭৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ৭৩ কোম্পানি QRT। দার্জিলিঙে থাকছে ৫১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ৫৩ কোম্পানি QRT। কালিম্পঙে ১৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ১৫ কোম্পানি QRT থাকছে। শিলিগুড়িতে থাকছে ২১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ২১ কোম্পানি QRT। রায়গঞ্জে ৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ৬০ কোম্পানি QRT। ইসলামপুরে ৫১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ৫১ কোম্পানি QRT।
ভোটের অনেক আগেই এরাজ্য়ে চলে এসেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিভিন্ন এলাকায় রুট মার্চ করছে তারা। চারদিন পর লোকসভা ভোট শুরু হলে, কেন্দ্রীয় বাহিনী বা রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের কী কী করণীয়, এবার নির্বাচন কমিশন তা জানিয়ে দিল।
ভোটের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য় সশস্ত্র পুলিশের দায়িত্ব সম্পর্কে কমিশনের তরফে নির্দেশকা জারি করে বলা হয়েছে- ভোটকর্মী, ভোটার ও পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ করতে হবে। প্রিসাইডিং অফিসারের নির্দেশ মেনে চলতে হবে। ভোটকেন্দ্রে বা সেই চত্বরে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে নিরপেক্ষভাবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। জনগণ যাতে নিরাপদ বোধ করেন এবং কোনও ভয় ছাড়া ভোট দিতে পারেন, সেই মতো পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রচার চলাকালীন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তায় সতর্ক থাকতে হবে। ভোটারদের লাইন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারা গন্ডগোল পাকাতে চাইছে, তাদের সনাক্ত করার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। কিছু নজরে এলেই সেক্টর অফিসার এবং পর্যবেক্ষককে জানাতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কা থাকলে প্রিসাইডিং অফিসার বা সেক্টর অফিসারের নজরে আনতে হবে।
আরও পড়ুন, অযোগ্যদের আড়ালে মরিয়া চেষ্টা, অতিরিক্ত শূন্যপদ প্রসঙ্গে এবার প্রশ্নের মুখে রাজ্যের মন্ত্রিসভা
কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ কী করবে না, তা নিয়েও স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, নির্বিচারে গুলি চালানো যাবে না। ভোটার ও ইভিএমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আত্মরক্ষায় শেষ পন্থা গুলি চালানো। আপত্তিজনক শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। অপ্রয়োজনীয়ভাবে বলপ্রয়োগ করা যাবে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি বা দলকে ভোট দিতে বলা যাবে না।
অন্যদিকে, স্ট্রং রুমে EVM কারচুপির অভিযোগ রুখতে এবার অভিনব পন্থা নিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্ত, এবার থেকে স্ট্রং রুমের বাইরে নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন সবকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। স্ট্রং রুমের বাইরে শিবির তৈরি করে তাঁরা নজরদারি চালাতে পারবেন। প্রতিটি স্ট্রং রুমের বাইরে এক প্ল্যাটুন অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ২৪ জন জওয়ান মোতায়েন থাকবেন। প্রতিদিন দু’বেলা রিটার্নিং অফিসারকে স্ট্রং রুমে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তা নথিভুক্ত করতে হবে। কোনও প্রার্থী স্ট্রং রুমের অবস্থা দেখতে চাইলে, তাঁকে পেরোতে হবে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়। সাদা কাগজ ও কলম ছাড়া সঙ্গে কিছুই রাখতে পারবেন না প্রার্থী। নিজের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল ফোনের নম্বর নথিভুক্ত করে প্রার্থীকে স্ট্রং রুমে ঢুকতে হবে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে