কলকাতা: লোকসভা ভোটের ফলাফল (Loksabha Elections 2024 Results) প্রকাশের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীদের উপর তৃণমূল হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। ইতিমধ্যেই কোচবিহার থেকে কলকাতা, সন্ত্রাসের ফলে (WB Post poll violence)  ঘরছাড়া হয়েছেন অনেক বিজেপি কর্মী। এর জন্য ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যপালের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।  এবার নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট করে দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন ঘাটালের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায় (Ghatal BjP candidate Hiranmoy Chattopadhyay)।


ওই পোস্টে আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। নাম না করে দেবের কাছে আবেদন করেছেন। তিনি লিখেছেন, "আমি হেরে গিয়েছি। আমি তো হার স্বীকার করছি। হয়তো সব আমারই দোষ। দরকার পড়লে আমাকে মারুন, আমার বিরুদ্ধে পুলিশ কেস করুন, আমাকে শাস্তি দিন আপনি এবং আপনার কার্যকর্তারা। কিন্তু আমার দলের গরিব-অসহায় কর্মী দের ওপর এই অত্যাচার দয়া করে করবেন না, তাদের দোষ কি খালি এটাই যে তারা বিজেপি কর্মী। আমি খুব কাছের থেকে এই নির্বাচনে কেশপুর, সবং এবং পিংলা কে প্রত্যক্ষ করেছি; চোখের সামনে ভোটের দিনের প্রায় ৫ দিন আগের থেকে ভয়াবহ সন্ত্রাস হতে দেখেছি, ভোটের আগের রাত্রেও আমাদের ৫৭ -জন পোলিং এজেন্ট দের ঘর-বাড়ি ধ্বংস হতে দেখেছি, বহু মায়ের আর্তনাদ শুনেছি যে তাঁর ছেলে বিজেপি পোলিং এজেন্ট, তাই ওকে বাঁচিয়ে দিন একটাই ছেলে নিয়ে ছোট গরিব সংসার তাঁর। আমরা সকলেই গণতান্ত্রিক দেশের জনগণ, বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার টুকু দয়া করে আমার কর্মী দের দিন; আপনি তো জিতে গিয়েছেন, আপনার তৃণমূল তো জিতে গিয়েছে - আমরা হেরে গিয়েছি আবার হার স্বীকার করছি তবুও কেন আমার দলের কর্মীরা হাসপাতালে কেউ মাথা ফেটে, হাত - পা ভেঙে, কান কেটে দেওয়ার মতন অবস্থায় শুয়ে রয়েছেন। কেনই বা তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের উপর সন্ত্রাস -  বোমাবাজি - মারধর করা হচ্ছে ? বাঙালি খুব ভাল বোমা বাঁধতে পারে। স্বাধীনতা আন্দোলনের যে সশস্ত্র বিপ্লবী ধারা আছে, সেই ইতিহাস পড়লে তা বোঝা যায়। উত্তর ভারতের বিপ্লবীরা বাংলার গুপ্ত সংগঠন থেকে বোমার দক্ষ কারিগরদের ডেকে নিয়ে যেতেন। অবিভক্ত মেদিনীপুরের ভূমি ক্ষুদিরাম বসুর পবিত্র ভূমি। বিদেশি ইংরেজকে মারার জন্য ক্ষুদিরাম-প্রফুল্ল চাকির হাতে বোমা তুলে দিয়েছিলেন বিপ্লবী দলের নেতারা। 


সত্তরের দশকে বাঙালি নকশাল বিপ্লবীরা পুলিশের উপর পেটো ঝাড়তো, সেই কারণটাও বোধগম্য। তারা ভেবেছিল রাষ্ট্রব্যবস্থা পাল্টানোর জন্য বোমা আর পাইপগান‌ই যথেষ্ট। কিন্তু আজকে কাকে মারার জন্য ঘরে ঘরে বোমা মজুত করছে আপনার কর্মীরা? সংসদীয়-পরিষদীয় রাজনীতি আর বোমাবাজির রাজনীতি তো এক সাথে চলতে পারে না। আপনার এবং আপনার কর্মীদের যদি রাজনীতি করতে গিয়ে বোমা-বন্দুকের রাস্তাটাই বেটার মনে হয়, তবে সেটাই ভালমতো গ্রহণ করুক না। হেরেছি তো আমি, আমার ক্ষতি করুন…


কিন্তু আপনি তো সৌজন্যতার প্রতীক এবং সৌজন্যতার ভগবান হাত জোড় করে বলছি দয়া করে আমার দলের কর্মী দের প্রতি এবার একটু সত্যিকারের সৌজন্যতা দেখান ..


🙏🙏আবারো বলছি আপনি জিতে গিয়েছেন দয়া করে এই হিংসা বন্ধ করুন আপনাদের কর্মী দেরও বলুন আপনারা জিতে গিয়েছেন…"


 






আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Post Poll Violence:"আগামী ৫ বছর কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিতে হবে" কেন বলল হাইকোর্ট ?