কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। হাইকোর্টে ভর্ৎসিত হয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। শুধু তাই নয়, রাজ্য়পালও নাকি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ না করে নবান্নে ফেরত পাঠিয়েছেন। যদিও বৃহস্পতিবার সেই দাবি নাকচ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবুও ইতিমধ্যেই ভোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও নানা প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
একদিকে রাজ্যপালের এমন পদক্ষেপ, অন্যদিকে হাইকোর্টের ভর্ৎসনা। গোটা পরিস্থিতিকে কী চোখে দেখছেন ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে থাকা মীরা পান্ডে? কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সেই নিয়েই মুখ খুললেন মীরা পান্ডে।
যদি রাজ্যপাল রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ না করেন, যদি কমিশনার পদ খালি হয়ে যায় তাহলে কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি মীরা পান্ডে। এখনও সেটা হয়নি, মন্তব্য করবেন না বলেন। কিন্তু সাংবিধানিক ভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ছাড়া কী ভোট প্রক্রিয়া চালানো সম্ভব? এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য় নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডে বলেন, 'এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে সঙ্কট কী হতে পারে? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, কমিশনার যদি না থাকে ভোট প্রক্রিয়া এগোবে কী করে?' কমিশনার যদি না থাকেন ভোট সম্ভব? তার উত্তরে মীরা পান্ডের বক্তব্য, কমিশনারকে প্রয়োজন। সংবিধান কমিশনারকে এই ক্ষমতা দিয়েছে। নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সব ক্ষমতা কমিশনারের রয়েছে।
একাধিক মামলায় হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখেও পড়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ভর্ৎসনা করেছিলেন, যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা মেনে কাজ না করতে পারলে পদ থেকে সরে যান বলে ভর্ৎসনা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বুঝতে, তার অর্থ বুঝতে রাজীব সিন্হা ব্যর্থ হয়েছেন, এমনটাই আদতে বলা হয়েছিল হাইকোর্টের তরফে। এই প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করতেই মীরা পান্ডে বলেন, 'নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে, শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করানোর প্রতিষ্ঠান। কমিশন স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন করাবে, এটাই কাম্য।' ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে কমিশনের পড়া কাম্য নয় বলে মন্তব্য প্রাক্তন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের।
শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এবার। ২০১৩ সালে আইনি পথে লড়াই করে, রাজ্যের বিরুদ্ধে দিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে পঞ্চায়েত নির্বাচন করেছিলেন মীরা পান্ডে। এখন কেন করা যাচ্ছে না? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য দিতে চাননি তিনি। তবে তিনি বলেছেন, 'নিজে চাইলেই নিরপেক্ষ থাকা যায়, নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করা যায়। রাজ্য পুলিশ দিয়ে সুষ্ঠ নির্বাচন করানোই যায়। কিন্তু রাজ্যে এত পুলিশ থাকে না। সাধারণ মানুষের আস্থার কারণেই প্রয়োজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর।'