সমীরণ পাল, আড়িয়াদহ: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে হিংসার অভিযোগ উঠে আসছে একাধিক জায়গা থেকে। এবার আড়িয়াদহে (Ariadaha News) প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চলার ঘটান সামনে এল। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই গুলি চলেছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে প্রকাশ্য়েই সরব হলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। তাঁর দাবি, আড়িয়াদহে গুলি চালানো ব্যক্তি থেকে আক্রান্ত, প্রত্যেকেই তৃণমূলের (TMC)।
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন মদন। বলেন, "গুলি যারা করেছে বলে নাম আসছে, তাদেরকে ব্যক্তিগত ভাবে আমি চিনি না বললে ভুল হবে। কারণ তারাও এলাকার ছেলে। এদের অপরাাধের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। গুলি চালাও, মারো বলে উস্কানি দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন দু'একজন ঠিকাদার। টাকা দিয়ে অপরাধী বানাচ্ছে। আগেও পুলিশকে বলেছি।"
মদন আরও বলেন, "বেলঘরিয়া থানায় চার বছর ধরে আইসি রয়েছেন। বাংলার আর কোনও থানায় তিন বছরের বেশি আইসি থাকেন না। বেলঘরিয়া থানা ভেঙে এখন দক্ষিণেশ্বর-কামারহাটি-বেলঘরিয়া থানা হয়েছে। তার পরেও প্রকাশ্য দিবালোকে যদি বাড়ির মেয়েরা না বেরিয়ে আসত...দু'রাউন্ড ফায়ার হয়েছে। প্রকাশ্যে মেরেছে। যে গুলি খেয়েছে, যে গুলি করেছে, সবাই তৃণমূলের সঙ্গে আছে। বাইরের কেউ নয়।" এই ছেলেরা কেউ অপরাধী নয়, তাদের অপরাধী বানানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মদন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে আড়িয়াদহে গুলি চলেছে বলে দাবি সামনে এসেছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই নেপথ্য কারণ বলে অভিযোগ। তাতে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় প্রাণে বাঁচলেও, রাস্তায় ফেলে রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হল যুব তৃণমূল নেতাকে। সেই ঘটনা নিয়েই চাঞ্চল্যকর ইঙ্গিত করেছেন তৃণমূল বিধায়ক মদন। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোল উদ্ধার হলেও, পুলিশের দাবি, আড়িয়াদহে গুলি চলেনি।
গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি অরিত্র ঘোষ নামে ওই যুব তৃণমূল নেতা। তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে, বাইকে করে কাজে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীরা পথ আটকায়। তাঁকে লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ।
দেগঙ্গা থেকে শুরু ভাটপাড়া, ব্যারাকপুর, বনগাঁ.. গুলি, বোমাবাজি, অশান্তির ঘটনায় প্রায়শই শিরোনামে থাকে উত্তর ২৪ পরগনা। এক সপ্তাহ আগে দেগঙ্গায় আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে মুড়ি মুড়কির মতো বোমাবাজি, গুলি চলে। চলতি মাসেই বনগাঁয় বোমা ফেটে মৃত্যু হয় ১১ বছরের বালকের। গত মাসে ভরসন্ধেয় ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীতে সোনার দোকানে ঢুকে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। মৃত্যু হয় একজনের।
তার আগে এপ্রিল, টিটাগড়ে দিনেদুপুরে শ্য়ুটআউটের ঘটনা ঘটে। খুন হন এক ডাম্পার ব্য়বসায়ী। নিহত ব্যক্তিকে তাদের দলের কর্মী বলে দাবি করে তৃণমূল। তার পর আরও একবার গুলি চলার অভিযোগ সামনে এল এবং তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মদন।