ভুবনেশ্বর: লোকসভার ভোটের আবহেই হয়েছিল ওড়িশার বিধানসভা নির্বাচনও। কুর্সি দখলের লড়াইয়ে ছিল সব দলই। তবে চমক লাগিয়ে ২৪ বছরের নবীন-জমানায় এবার ইতি টানল বিজেপি। গত দু-দশকের বেশি সময় ধরে ওড়িশার রাজনীতিতে একচ্ছত্র অধিকার ছিল নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দলের (বিজেডি)। তবে সেই অশ্বমেধের ঘোড়া থামাল পদ্মশিবির। নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ওড়িশায় ক্ষমতায় এল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
১৪৭ আসনের বিধানসভা আসনে বিজেপি জিতেছে ৭৮টি আসন। ২০০০ সাল থেকে জয়লাভ করে আসা বিজেপি এবারের বিধানসভা নির্বাচনে পেয়েছে ৫১টি আসনে। যা নির্বাচনী ইতিহাসের নিরিখে নবীন পট্টনায়েকের দলের সবচেয়ে খারাপ ফলাফল। এমনকী ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক কান্তাবাঞ্জি আসনে বিজেপির লক্ষ্মণ বাগের কাছে ১৬ হাজার ৩৪৪ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম নবীনের এই পরাজয়। তবে যে আসন থেকে তিনি সবসময় দাঁড়িয়েছেন এবং জয়লাভ করেছেন সেই হিঞ্জিলি আসনে নবীন পট্টনায়েক জিতেছেন মাত্র ৪ হাজার ৬৩৬ ভোটে। এই আসন থেকে এই প্রথম এই কত ভোট ব্যবধানে জিতলেন নবীন।
তবে রাজনীতির ইতিহাসে যে রেকর্ড তিনি করতে পারতেন তা হল দীর্ঘতম সময়ের মুখ্যমন্ত্রী। তবে বিজেডির এই পরাজয়ে সেই রেকর্ড আর হবে না। বুধবারই পদত্যাগ করছেন নবীন পট্টনায়েক। তবে ৫১ সিটে জেতা বিজেডির সব প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন ওড়িশার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী।
প্রাথমিকভাবে বিজেডি আর বিজেপির জোট থাকলেও ২০০৯ এ ছিন্ন হয় সম্পর্ক। সেই সময় রেকর্ড ভোটে জিতেছিল বিজেডি। বরং 'উধাও' ছিল বিজেপি। তবে ধীরে ধীরে নিজেদের মাটি শক্ত করছিল বিজেপিও। ২০২৪ এর নির্বাচনে দেখা গেল সেই ফল।
আরও পড়ুন, লোকসভা ভোটে 'শূন্যহাতে' CPIM, কেন বাংলায় প্রত্যাখ্যাত বামেরা?
রাজনৈতিক মহলের অবশ্য মত, ওড়িশায় বিজেপির নিরঙ্কুশ জয়ের অন্যতম কারণ হল, প্রতিষ্ঠানবিরোধী ঝড়। বিজেপির পক্ষে ভোট নয়, নবীন পট্টনায়েকের দলের বিরুদ্ধ ভোটে জয়লাভ করেছে পদ্মশিবির।
ওড়িশায় এই জয়ের পর দিল্লি থেকে 'জয় জগন্নাথ' আওয়াজ তোলেন নরেন্দ্র মোদি। নিজের এক্স পোস্টে মোদি লেখেন, 'ধন্যবাদ ওড়িশা। সুশাসন এবং ওড়িশার অনন্য সংস্কৃতি উদযাপনের জন্য এই জয় বড় জয়। জনগণের স্বপ্ন পূরণ করতে এবং ওড়িশাকে উন্নতির নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে বিজেপি সব কাজ করে যাবে। সকল কর্মী সমর্থকদের ধন্যবাদ। ”