কলকাতা : গণতন্ত্রের উৎসবে বাংলাজুড়ে কার্যত লাশের সারি। রক্তস্রোত বইছে রাজ্যে। গ্রাম দখলের লড়াই ঘিরে কার্যত ব্যাটলগ্রাউন্ড বঙ্গ। বোমা, গুলি, অস্ত্র, হিংসা, মারামরি, খুন, জখম। বাদ নেই কিছুই। ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা থেকে হুমকি, হুঁশিয়ারি, ভোটরঙ্গে বাদ নেই তাও। এর মাঝেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections 2023) দিনে একঝলকে দেখে নেওয়া যাক ভোটের আগেই জয়ের সেলিব্রেশন হয়েছে কোথায় কোথায় ? গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে জেলা পরিষদ, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে কোন জেলায় কোন দল কত আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই জিতে নিয়েছিল ?


রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (West Bengal Election Commission) হিসেব জানাচ্ছে, তিনটি স্তর মিলিয়ে ৭৩৮৮৭ টি আসনে ৯০০৯ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় এসেছিল। যা মোট আসনের প্রায় ১২ শতাংশ। গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৩২২৯টি আসনের মধ্যে বিনা যুদ্ধে জয় ৮০০২ টি আসনে। পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৯৭৩০ টি আসনের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় ৯৯১ টি আসনে। জেলা পরিষদের মোট ৯২৮টি আসনের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় ১৬টি আসনে।


প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যে সংখ্যাটা সবথেকে বেশি। সেখানে ৬৩৮৩ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় ১৭৬৭ টি আসনে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পঞ্চায়েত সমিতির ৯২৬টি আসনের মধ্যে ২৩৩ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের ৮৫ টি আসনের মধ্য়ে ৩ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়। 


আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে অভিযোগের পাহাড় ! তবে অফিসে গরহাজির নির্বাচন কমিশনার


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial


উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর বিধানসভা কেন্দ্র দিনহাটার ২ নম্বর ব্লকে সুকারুর কুঠি ও চৌধুরীর হাট গ্রাম পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছে তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বিজেপির দখলে থাকা কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত শুকটাবাড়ি পঞ্চায়েতেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহারে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে ৩৬ শতাংশ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় শাসকদল। যদিও, এক বছর পর লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। একুশের বিধানসভা ভোটেও এই জেলার অধিকাংশ আসনে হারের মুখ দেখতে হয় রাজ্যের শাসক দলকে। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে কি জমি পুনরুদ্ধার করতে পারবে তৃণমূল ? সেটাই দেখার।


উত্তরবঙ্গের অপর জেলা উত্তর দিনাজপুরে ভোটের আগেই চোপড়ায় জেলা পরিষদের ২টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের। চোপড়ায় পঞ্চায়েত সমিতির ২৪টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল। চোপড়ায় গ্রাম পঞ্চায়েতে ২১৭টি আসনের মধ্যে ২১৬টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল। শুধুমাত্র একটি আসনে নির্দল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে মনোনয়নই জমা দেওয়া যায়নি, অভিযোগ বিরোধীদের।


দক্ষিণবঙ্গেও বিভিন্ন জেলাতে দেখা গিয়েছে একই চিত্র। বাঁকুড়ায় ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতি, ইন্দাস পঞ্চায়েত সমিতি, কোতুলপুর পঞ্চায়েত সমিতিকে জয় শাসক দলের। বাঁকুড়ার জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতিতেও জয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের। ৪টি ব্লকের ৩৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের।