রুমা পাল, কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে প্রথম থেকেই টানাপড়েন চলেছে। কোথায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে, কতজন করে জওয়ান থাকবেন? কীভাবে ব্যবহার করা হবে- এরকম নানা প্রশ্ন রয়েছে। বাহিনী নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের টানাপড়েন চলেছে। 


এবার মুখ্যসচিব ও ডিজির সঙ্গে স্পর্শকাতর বুথ নিয়ে আলোচনা কমিশনের। জেলা প্রশাসনকে স্পর্শকাতর বুথ ও এলাকার তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। যে বুথে অতীতে ৯০%-এর বেশি ভোট পড়েছিল বা যেখানে কোনও প্রার্থী ৭৫%-এর বেশি ভোট পেয়েছিলেন, সেই সব বুথ চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। 


কী কী প্রশ্ন উঠেছে:
লাগামহীন সন্ত্রাস, তবুও কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে টানাপড়েন? 
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে পরিকল্পনার অভাব? উত্তর নেই কমিশনের কাছে
ভোটের আগেই ২৩ দিনে ১৩ জনের মৃত্যু, তবু কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে টালবাহানা?


পঞ্চায়েত ভোটের আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। এখনও রাজ্যে নানা জায়গায় সংঘর্ষ, খুন, হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। কিন্তু, বাকি ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী কবে আসবে, তা এখনও অনিশ্চিত। কতগুলি স্পর্শকাতর বুথ, তা এখনও ঠিক করতে পারেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন।


এরই মধ্যে রবিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনে, কমিশনার রাজীব সিন্হার সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, ডিজিপি মনোজ মালব্য, এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম। যখন ভোটের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি, সেখানে অবশেষে এদিনের বৈঠকে, স্পর্শকাতর বুথ ও এলাকা চিহ্নিত করতে তৎপর হল কমিশন ও রাজ্য প্রশাসন।ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পর থেকে, যেখানে যেখানে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, সেগুলিকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। যেসব বুথে অতীতে ৯০%-এর বেশি ভোট পড়েছিল এবং একজন প্রার্থী ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিলেন, সেই বুথগুলোকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক জেলাশাসক ও বিডিওদের। যে সব বুথে আগে পুনর্নির্বাচন হয়েছে, তারও তালিকা চেয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। 


সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'বাহিনী কোথায় থাকবে, কেন থাকবে এর কোনও পরিকল্পনা নেই। এমনকি সেনসেটিভ বুথ, তা পর্যন্ত ঠিক করতে পারেনি। রাজ্য পুলিশ কত লাগবে, সেটা পর্যন্ত জানে না। জেলাতে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী, এই যাদের মনোভাব হয়, তারা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।'


সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত মামলার শুনানি আছে। তার আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'সেন্ট্রাল ফোর্স আটকাতে এরা উঠে পড়ে লেগেছে। আমরা চাই, সেন্ট্রাল ফোর্সের উপস্থিতিতে ভোট হবে, গণনা হবে। আদালতের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি।'


এরই মধ্যে মুখ খুলেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও। তিনি বলেন, 'আমাদের যেখানে বোর্ড থাকে, তার আশপাশে পুকুর, পানাপুকুর কাদা থাকবে, ভোটাররা পুকুরে ঢুবে ভোট দেবে, বাহিনী তো অতো রিস্ক নেবে না, নাকা করে ঘুরে ঘুরে,যেতে যেতে ভোট হয়ে যাবে, game is over'


আরও পড়ুন: সাফল্যের পথে আসা সব ধরনের বাধা দূর করে, বাড়ির কোন দিকে রাখবেন অ্যালোভেরা গাছ ?