কলকাতা : কথা আর কাজে তফাৎ ঠিক কতটা ? রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) ক্ষেত্রে, তফাৎটা চার ভাগের এক ভাগ। কথা ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election 2023) রাজ্যের সব বুথে হাজির থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রায় ৬০ হাজারে বেশি বুথে যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করানো যায়, সেজন্য ক্রমাগত তিরষ্কারের পর এমনই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।


কিন্তু ভোটের দিন কত বুথে হাজির থাকল কেন্দ্রীয় বাহিনী ? রক্তস্নাত গ্রাম বাংলার ভোট দেখে যে প্রশ্নই উঠছিল। উত্তরটা মাত্র চার ভাগের এক ভাগে ! রাজীব সিনহা (Rajiva Sinha) নিজে যে তথ্য জানালেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, ৬০ হাজার বুথে থাকার কথা থাকলেও সব কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে না পৌঁছনোয় শেষ পর্যন্ত চারভাগের একভাগে, প্রায় ১৫ হাজার বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখা সম্ভব হয়েছিল।


পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেলাগামা সন্ত্রাসের খবর আসতে শুরু করে। যদিও ভোট শুরু হয়ে যাওয়ার প্রায় ৩ ঘণ্টা পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে পৌঁছন রাজীব সিনহা। যারপর তিনি ডেকে পাঠান কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কমিশনের সম্বন্বয়ের দায়িত্বে থাকা বিএসএফের ডিজিকে। যাঁর সঙ্গে কোথায় কত কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছেছে, সেই তথ্য জানতে চান বলেই জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার।


পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে ভোটের দিন দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৬০০ অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। যে তথ্য দিয়ে অবশ্য তাঁর দাবি, ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে নাকি ভোটে অশান্তি হয়েছে, তা বলা যাবে বিস্তারিত তথ্য হাতে এসে পৌঁছলেই। সঙ্গে তাঁর প্রত্যাশা, আশা করি পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।


আরও পড়ুন- 'সব শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলা সম্ভব নয়', ৩২ জনের প্রাণহানি, বেলাগাম সন্ত্রাসের পর বললেন নির্বাচন কমিশনার


প্রসঙ্গত, রাজ্যে ভোটপর্ব শুরুর পর থেকেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। তাঁদের কথা না শুনে রাজ্যের শাসকদলের পক্ষে কাজ করার মতো গুরুতর অভিযোগও শানানো হয়েছে। যারপর কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে আনা থেকে স্পর্শকাতর বুথ বা অঞ্চল বেছে নেওয়া, একাধিকবার কলকাতা হাইকোর্টেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সরাসরি তাঁর নাম করে 'দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ' বলেই সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যে চলতে থাকা অশান্তি, রক্তপাতের জন্য কমিশনারকে দায়ীও করেছিলেন সিভি আনন্দ বোস। 


এসবের মাঝেই ভোটের দিন নির্বাচন কমিশন কতটা কার্যকরী ভূমিকা নেয়, সেটা দেখতেই নজর ছিল সকলের। যদিও শান্তিপূর্ণ ভোটের ছবির প্রত্যাশার মতোই কমিশন ও কমিশনারের ভূমিকা নিয়েও শুধু হতাশাই সঙ্গী হয়েছে রাজ্যের মানুষের। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial