কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, সুদীপ্ত আচার্য ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়: পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Elections 2023) তৃণমূলের (TMC) জয় নিয়ে বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Abhishek Banrjee)। বললেন, প্রত্য়েকটি জেলা পরিষদেরই জিতবে তৃণমূল। আমাকে ধমকে-চমকে রাখা যাবে না, হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক। নরেন্দ্র মোদিকেও নিশানা করেন তিনি। পাল্টা সুর চড়িয়েছে বিজেপি (BJP)।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে নবজোয়ার কর্মসূচিতে প্রায় দুই মাস জেলার মাটি কামড়ে পড়ে থেকেছেন অভিষেক। এবার ভোটে জয় নিয়ে, বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তিনি। বললেন, "২০২১-এ যে ভোট পেয়েছিল তৃণমূল, ২০২৩ এ, তার চেয়ে বাড়বে। বিজেপির সঙ্গে যে ভোটের ব্যবধান ছিল, তা বাড়বে, প্রত্যেকটা জেলা পরিষদ জিতবে তৃণমূল। তোমাদের কাছে ইডি, সিবিআই, মোদি, টাকা, আছে। আমাদের কাছে আছে মানুষ।"
আর যেদিন নিরঙ্কুশ জয়ের টার্গেট বেঁধে দিচ্ছেন অভিষেক, সেদিনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর এবং মুর্শিদাবাদের রানিনগরে বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই প্রেক্ষাপটে এদিন শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইটারে লেখেন, 'সশব্দ বিপ্লব। অথবা মাননীয়ার কথায় বললে প্রতিবাদ হচ্ছে প্রতিরোধের। আসলে এইভাবে বিপ্লব অথবা প্রতিবাদ করে বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে না পারলে, তোলামূল দলটাই যে বাংলা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে'।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: মুকুল, শুভেন্দুর মতো তাঁকেও ভাঙানোর চেষ্টা! BJP-কে তীব্র আক্রমণ অভিষেকের
অভিষেককে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও। তাঁর কথায়, "পঞ্চায়েত আর বিধানসভা এক না। বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা, চাপ, ডিএম ঠিকমতো কাজ করছে না। পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। তবুও লড়াই হবে।"
এ দিন ফলতার সভা থেকে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক। বলেন, "ধমকে, চমকে, আমাকে বাড়িতে বসিয়ে রাখতে পারবে না। ওরা কি মনে করেছে? হিমন্ত বিশ্বশর্মা, মুকুল, শুভেন্দুর মতো যা করেছে, আমার ক্ষেত্রে তাই করবে মনে করেছে। হয় অভিষেককে জেলে ঢোকাবো, না হয় দলে টানবো। রাজনীতি করবো না। রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রমকাজ করব, কিন্তু যতদিন করবো রাজনীতি, জয় বাংলা ছাড়ব না।"
এ নিয়ে শমীক বলেন, "শুভেন্দু ফোবিয়ায় ভুগছে, তাই সবেতেই শুভেন্দু। মুকুল নিয়ে আগ্রহ নেই।"
গত ৫ জুন কলকাতা বিমানবন্দরে আটকানো হয় অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কয়লাকাণ্ডে তাঁকে বিমানবন্দরেই নোটিস ধরায় ED. আবার ৮ জুন রুজিরা হাজিরা দিয়ে বেরোনোর পরই প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে তলব করে ED. রবিবারের সভা থেকে এনিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করেন অভিষেক।
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন, বিদেশ সফরে নরেন্দ্র মোদির ছাত্রপত্র না পাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন অভিষেক। বলেন, "আমার তিন বছরের বাচ্চাকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না। ন বছরের মেয়েকে যেতে দিচ্ছে না। মোদি এত বড় নেতা আটকাচ্ছে আমার বাচ্চাগুলোকে। আপনাকেও একদিন আমেরিকা যেতে ক্লিয়ারেন্স দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার মানুষ কিন্তু তার জবাব দিয়ে দিয়েছে। আপনি যেটা করছেন মানুষ তার জবাব দেবে।"
এ প্রসঙ্গে শমীকের জবাব, "ভারত সরকার আটকায়নি। পঙ্গু সরকারকে ফেলে মোদির নিজের ক্যারিশমা। মানুষ মোদির পাশে ছিল, পাশে থাকবে।" যদিও- দুই পক্ষকেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর কথায়, "বিজেপিকে খুশি করাই লক্ষ্য। বিজেপিকে খুশি করা মানে কংগ্রেসের বিরোধিতা করা।" সব মিলিয়ে, শাসক থেকে বিরোধী পঞ্চায়েত ভোটের আগে সমানে চলছে তাল ঠোকাঠুকি।