পুরী: নির্বাচনী প্রচারে ওড়িশায় পা রেখে ফের নবীন পট্টনায়ক এবং বিজু জনতা দলকে আক্রমণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে জগন্নাথ মন্দিরে প্রার্থনাও সারেন মোদি। আর সেখান থেকেই পুরীর রত্নভাণ্ডারের চাবি কোথায়, প্রশ্ন তোলেন তিনি। নবীন এবং BJD-র শাসনে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরও নিরাপদ নয় বলে দাবি করলেন মোদি। (Puri Ratna Bhandar)


বঙ্গসফরের মাঝেই সোমবার ওড়িশায় দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে যান মোদি। সেখানে পৌঁছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির হয়ে শোভাযাত্রা করেন। সেই ফাঁকে মন্দিরে ঢুকে প্রার্থনাও সারেন। এর পর অঙ্গুলের সভায় ফের একবার জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডারের প্রসঙ্গ টানেন। মোদি বলেন, "BJD-র আমলে পুরীর জগন্নাথ মন্দির একেবারেই নিরাপদ নয়। গত ছ'বছর ধরে মন্দিরের রত্নভাণ্ডারের চাবি গায়েব।" 


রাজধানী  ভুবনেশ্বরের পাশাপাশি আগামী ২৫ মে পুরী লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। পুরী-সহ গোটা ওড়িশার মানুষের কাছেই জগন্নাথ মন্দির এবং রত্নভাণ্ডারের গুরুত্ব অপরিসীম, তা অনুধাবন করেই এদিন মোদি মন্দিরের নিরাপত্তার বিষয়টি উস্কে দেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের। লোকসভা নির্বাচনে ওড়িশার ২১টি আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। (Narendra Modi)



আরও পড়ুন: Covaxin Safety Reports: বিরল রোগ, নারীস্বাস্থ্যে প্রভাব? Covaxin-এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রিপোর্টে জলঘোলা, প্রত্যাহারের দাবি জানাল ICMR


জগন্নাথ মন্দিরের যে রত্নভাণ্ডারের উল্লেখ করেছেন মোদি, তা নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়। ওই রত্নভাণ্ডারে ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার সমস্ত গয়না সঞ্চিত রয়েছে বলে জনশ্রুতি। বিগত কয়েকর শতকে যত রাজা, মহারাজা এবং পুণ্যার্থীরা মূল্যবান গয়না, রত্ন ভগবানকে উৎসর্গ করেছেন, সবই ওই রত্নভাণ্ডারে রয়েছে বলে শোনা যায়। ১৯৮৫ সালের ১৪ জুলাই ওই রত্নভাণ্ডারটি শেষ বার খোলা হয়েছিল।


রত্নভাণ্ডারটি নিয়ে ইতিমধ্যে আদালতেও মামলা গড়িয়েছে। ২০১৮ সালে ওড়িশা হাইকোর্ট রাজ্যের সরকারকে রত্নভাণ্ডারটি খোলার নির্দেশ দেন, যাতে সশরীরে গিয়ে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা যায়। কিন্তু রত্নভাণ্ডারের চাবির কোনও হদিশ মেলেনি, যা নিয়ে সেই সময়ও বিতর্ক চরমে ওঠে। এদিন মোদিও সেই বিতর্ক আরও একবার উস্কে দিলেন। 


এদিন জগন্নাথ মন্দিরে প্রার্থনা সেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ছবিও পোস্ট করেন মোদি। তিনি লেখেন, "পুরীতে মহাপ্রভু জগন্নাথের কাছে প্রার্থনা করলাম। আমাদের মাথার উপর সবসময় ওঁর আশীর্বাদ থাকুক, উন্নতির শিখরে পৌঁছতে উনি আমাদের পথ দেখাতে থাকুন।" এদিন পুরীতে দু'কিলোমিটার শোভাযাত্রা করেনমোদি। পুরীতে BJP-র প্রার্থী সম্বিত পাত্রও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। ছিলেন রাজ্যে বিজেপি-র সভাপতি মনমোহন সমালও।


গত ১০ দিনে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার পুরীতে প্রচারে গেলেন মোদি। সেখানে BJD-র সঙ্গে কড়া টক্কর চলছে BJP-র। এবারের লোকসভা নির্বাচনে জোট গড়তে অসফল হয় দুই দলই। দীর্ঘ দরাদরির পরও প্রাক নির্বাচনী জোট গড়ে ওঠেনি। এর পরই পরস্পরের বিরুদ্ধে ঝাঁঝ বাড়িয়েছেন দুই দলের নেতারা। এর আগে, যৌথ ভাবেও ওড়িশায় ন'বছর সরকার চালিয়েছে BJD এবং BJP. ২০০৯ সালে তাদের জোট ভেঙে যায়। তবে সংসদে বিল পাসের ক্ষেত্রে এর পরও লাগাতার মোদি সরকারের সমর্থনে এগিয়ে গিয়েছে BJD, যে কারণে তাদের প্রতি এযাবৎ নরম মনোভাব দেখান মোদিও। কিন্তু এবারের নির্বাচনে সেই রীতিতে ছেদ পড়েছে। এর আগে, ১১ মে-র সভা থেকেও নবীনকে আক্রমণ করেন মোদি।