প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : মঙ্গলে টানটান লড়াই। প্রাথমিক পর্বে পিছিয়েও পড়েছিলেন। এগিয়ে যান তৃণমূল কংগ্রেসের ( TMC ) সুজাতা মণ্ডল। তারপর  রাউন্ড এগোতেই লড়াইয়ে ফেরেন সৌমিত্র ( Saumitra Khan ) । আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে ব্যবধান। সন্ধেবেলাতেই জানা যায়, ৫৫৬৭ ভোটে জিতে গিয়েছেন বিষ্ণপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। এরপরই স্ট্রংরুমে তুলকালাম বেঁধে যায়। ভোটের চূড়ান্ত ফল সামনে আসতে আসতে রাত ১০ টা বেজে যায়। কেন এমন ঘটল? উত্তর দিতে গিয়ে বিস্ফোরক সৌমিত্র খাঁ। দলের শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূলের সেটিংয়ের অভিযোগও আনলেন। একবার নয় , বারবার। সেই সঙ্গে দলের মাথায় অনভিজ্ঞ লোককে বসিয়ে, অভিজ্ঞ লোকেদের নিচে নামিয়ে রাখার মতো বিস্ফোরক অভিযোগও করলেন। এমনকী বললেন সুজাতা খুব ভাল ফাইট দিয়েছে। 


হঠাৎ কেন এমন বিস্ফোরক বিষ্ণুপুরের সাংসদ? জয় পেয়েও দলের স্ট্র্যাটেজির সমালোচনা তো করলেনই, বললেন জয় পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের জন্য। আর এস এস কর্মীদের জন্যই এই জয় পেয়েছেন বলে দাবি সৌমিত্রর। 


একদিকে যেমন বিজেপি প্রার্থী  নিশানা করলেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে, তেমনই ভোটে জেতার পর প্রশংসা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ট্র্যাটেজির। সৌমিত্র বলেন, অভিষেকরা এক-একটা লোকসভার দুটি করে বিধানসভা টার্গেট করে নিয়েছিল। ভোট হওয়ার দিন থেকেই তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীরা সতর্ক প্রহরায় ছিল। সেখানে বিজেপির নেতৃত্ব সেটা করেননি। অভিষেকের ইঙ্গিতও বোঝেননি।


সৌমিত্রর দাবি, বুধবার অহেতুক গণ্ডগোল পাকিয়ে দেরি করিয়ে প্রার্থী ও কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছিল তৃণমূল। সেটাই ওদের স্ট্যাটেজি ছিল। সৌমিত্র এও বলেন, অভিষেক ভাল কাজ করেছেন, তাই তৃণমূল ভাল ফল করেছে। 


বিষ্ণপুরের সাংসদের দাবি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এবং সংখ্যালঘু ফ্যাক্টর তৃণমূলের জন্য কাজ করেছে। বিজেপি মহিলা মুখ তৈরি করতে পারেনি। ২০১৯ সাল অবধি দলকে স্থানীয় স্তরে  রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় যেভাবে স্থানীয় স্তরে জয়সংযোগ তৈরি করতে পেরেছিলেন, তারপর আর হয়নি। সৌমিত্রর কথা, শুভেন্দু অধিকারী চেষ্টা করলেও পারেননি। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, বঙ্গ বিজেপির ওপরতলার নেতাদের সঙ্গ তৃণমূলের একটা বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছিল। না হলে আরও কয়েকটি আসন জিততে পারত বিজেপি । 


সৌমিত্রর পর্যবেক্ষণ,দিলীপ  ঘোষের মতো নেতাদের জেতা কেন্দ্র থেকে সরানো উচিত হয়নি। তাহলে হার বাঁচানো যেত। তবে এত কিছুর পরও সৌমিত্র বললেন, বারবার দল বদল করা যায় না,  দলে গুরুত্ব না পেলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। 


আরও পড়ুন :


'২০২১ অবধি এগিয়েছি, তারপর দলের অগ্রগতি থমকে গিয়েছে' এবার নেতৃত্বকেই নিশানা দিলীপের ?