শ্রীরামপুর: লোকসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুরে জয়ী হলেন তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। ৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ৮৩ ভোট পেয়েছেন কল্যাণ। বিজেপি প্রার্থী, প্রাক্তন জামাতা কবীরশঙ্কর বসুকে ৯৪ হাজার ১৭৫ ভোটে পরাজিত করলেন তিনি। শ্রীরামপুরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কবীরশঙ্কর। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। দীপ্সিতা ১ লক্ষ ৮ হাজার ৮৪৪ ভোট পেয়েছেন। (Serampore Loksabha Election Result)
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারপর্ব থেকেই খবরের শিরোনামে শ্রীরামপুর। তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা কল্যাণের বিরুদ্ধে সিপিএম-এর যুবনেত্রী দীপ্সিতার প্রার্থীপদ নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছিল। কিন্তু একেবারেই দমে যাননি দীপ্সিতা। বরং রীতি মতো কল্যাণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভোটের প্রচার করেন তিনি। প্রচারে কখনও কল্যাণকে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ বলে কটাক্ষ করেন দীপ্সিতা, কল্যাণ আবার দীপ্সিতাকে ‘মিস ইউনিভার্স’ বলে সম্বোধন করেন। সেই নিয়ে কম তরজা হয়নি। (Serampore Election Result)
অন্য দিকে, বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছিন্ন করে শ্রীরামপুরে এবার প্রার্থী দেয় আইএসএফ। শারিয়ার মল্লিককে সেখানে প্রার্থী করে তারা। আইএসএফ সেখানে ডিসাইডিং ফ্যাক্টর হতে পারে মনে করছিলেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তৃণমূল বিপুল ভোটে জয়ী হল সেখানে।
হুগলি জেলার পাঁচটি এবং হাওড়া জেলার দু’টি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গঠিত শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্র। স্বাধীনতার পর থেকে পালা করে সেখানে ক্ষমতায় থেকেছে মূলত বাম এবং কংগ্রেস। ১৯৫১ সালে সিপিএম-এর তুষারকান্তি চট্টোপাধ্যায় শ্রীরামপুরের সাংসদ নির্বাচিত হন, ১৯৫৭ সালে বিজয়ী হোন কংগ্রেসের জিতেন্দ্রনাথ লাহিড়ি।
১৯৯৮ সালে শ্রীরামপুরে প্রথম খাতা খোলে তৃণমূল। দলের প্রার্থী আকবর আলি খোন্ডকার সেখানে জয়ী হন। ২০০৪ সালে আবার শ্রীরামপুরে তৃণমূলকে হারিয়ে জয়ী হন সিপিএম-এর শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু আটের দশকের গোড়া থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত কোনও দলই পর পর দু’বার শ্রীরামপুরে জয়ী হয়নি। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সেই নিরিখে নজির গড়েন।
২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শান্তশ্রীকে হারিয়ে শ্রীরামপুরের সাংসদ নির্বাচিত হন কল্যাণ। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালেও জয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটান তিনি। এবারে দীপ্সিতাকে সেখানে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল সিপিএম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শ্রীরামপুরে বিজেপি-র বৈতরণী পার করতে পারতে পারলেন না তিনি।