কলকাতা: সন্দেশখালি আন্দোলনের অন্যতম মুখ রেখা পাত্র। তাঁকেই এবার বসিরহাট লোকসভা (Basirhat PC) আসনে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তাঁকে ফোন করে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। এবার সেই রেখা পাত্রকেই (BJP Candidate Rekha Patra) নিশানা করল তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে ভণ্ডামির অভিযোগ করেছে রাজ্য়ের শাসক দল।


তৃণমূলের (TMC attacked Rekha Patra) তরফে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে অভিযোগ করা হয়েছে যে, 'রেখা পাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিয়েও দিল্লির জমিদারদের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছেন।' রেখা পাত্রর স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ডের ছবি সোশ্য়াল মিডিয়ার ওই পোস্টে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে ট্যাগ করে তৃণমূলের কটাক্ষ, 'পরের বার রেখাকে ফোন করবেন, ওঁর স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের ব্যাপারে খোঁজ নিতে ভুলবেন না। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন তৃণমূল নেতৃত্বের ব্রেনচাইল্ড স্বাস্থ্য সাথী কীভাবে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পকে ছাড়িয়ে গেছে।' 


 





 
বসিরহাটের (Basirhat BJP Candidate) বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতোও। তাঁর দাবি, বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সাথী-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী। সেই সংক্রান্ত নথি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। 

রেখার তোপ:
বিষয়টি নিয়ে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র বলছেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস কী বলতে চাইছে? সরকারি সুবিধা নিতে গেলে তৃণমূল করতে হবে? প্রধানমন্ত্রী যে সুযোগ-সুবিধা দেয়, তিনি একবারও বলেননি এই সুবিধা পেতে গেলে বিজেপি করতে হবে। নরেন্দ মোদি যে  করোনার ভ্যাকসিন দিয়েছেন, যা নিয়ে তৃণমূলের নেতারা বেঁচে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কি বলেছেন যে ওঁর দেওয়া ভ্যাকসিন নিয়ে এরা বেঁচে আছেন। আমি দিদিকে বলব, আপনি একবার হাওড়ার ২২, ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যান, সেখানে দেখুন কতজন বাইরে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন।'


বিষয়টি নিয়ে তোপ দেগেছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, 'সরকারি নথি সহ বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থীর ব্যক্তিগত নথিও প্রকাশ করা হচ্ছে। রেখা পাত্রর ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে আরও নিম্নরুচির পরিচয় দিল তৃণমূল। বাংলার মানুষের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করুক নির্বাচন কমিশন। তৃণমূলের সরকারি নথির অপব্যবহার বন্ধ করতে পদক্ষেপ করুক কমিশন।'


 






তৃণমূল নেতা শান্তনু সেনের (Santanu Sen) দাবি, 'যে বিজেপির আমলে ৮৫ কোটি ভারতবাসীর আধার তথ্য বিদেশে পাচার হয়ে যায়। তাঁদের কাছে জ্ঞানের কথা শুনব? দিলীপ ঘোষের বাড়ির লোক, সুকান্ত মজুমদারের বাড়ির লোক মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের প্রকল্পের পরিষেবা নিয়েছেন। মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বেছে বেছে তৃণমূলের জন্য করবেন, বিজেপির জন্য করবেন না এমন তো করেন না। এটা তো খোলা তথ্য। পোর্টালে গিয়ে ক্লিক করলেই দেখা যাবে কারও নামে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রয়েছে কিনা। অমিত মালব্যর কথার কোনও গুরুত্ব নেই।' 


অধীরের দাবি:
তৃণমূলের কারণেই রেখা পাত্ররা বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন, মন্তব্য অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury)। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দাবি, 'দিদির জন্য এবং তৃণমূলের সৌজন্যে আজ রেখা পাত্রদের মতো মহিলা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, প্রার্থী হতে বাধ্য হচ্ছেন। যদি সন্দেশখালির মতো জায়গা তৈরি না হতো, সন্দেশখালির মতো পরিস্থিতি তৈরি না হতো তাহলে রেখা পাত্ররা বিজেপিতে যেত না, তাঁদের প্রার্থী হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হতো না। আসলে দিদি আর মোদি উভয়েই যান বাংলায় যেন ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি হয়।'


আরও পড়ুন: শিন্ডে শিবিরে 'কুলি নং ওয়ান'! 'মায়ানগরী'তে এবার তারকা প্রার্থী?