কলকাতা: 'বিচারবিভাগকে করজোড়ে বলছি,  জনগণ আপনাদের কাছে বিচারের জন্য যায়...আপনারা বিজেপির কুর্সিতে বসে বিচার করবেন না', ব্রিগেডের (TMC Brigade) জনগর্জন (Jana Garjon Sabha) সভা থেকে বললেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সংযোজন, 'এতে কাজের কাজ হয় না, স্রেফ জনতার ভোগান্তি বাড়ে।' তবে একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে আক্রমণ করছেন না। যদিও তার পর তিনি যা বললেন, তাতে তাঁর আক্রমণের নিশানায় কে সেটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায়।


মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি...
এর পরই তৃণমূলনেত্রী আরও বলেন, 'দেখলেন তো, ওঁদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। কেউটে সাপের থেকেও ভয়ঙ্কর। চেয়ারে বসেছিল কেউটে, বাইরে বেরিয়ে গোখরো। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছে বাবুর।' নাম না করলেও রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এদিন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিশানা করেন মমতা। গত কাল, শনিবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাওয়াখালির জনসভায় হাজির ছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরে প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে বলেন, 'ওঁকে প্রথম বার দেখলাম...ওঁর মতো নেতাই আমাদের দরকার। আমি ওঁর কাছে আশীর্বাদ চেয়েছিলাম। উনি আমাকে আশীর্বাদ করেছেন।' এদিনের জনগর্জন সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এত দিন অনেক বিচার করেছ, বহু ছাত্রছাত্রীর চাকরি খেয়েছ। এবার তোমাদের বিচার হবে। জনগণ বিচার করবেন তোমাদের, কী করে তোমরা এত চাকরি খেয়েছ?' কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলার শুনানি হয়েছিল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। তাঁর একের পর এক রায় ও পর্যবেক্ষণ রাজ্য রাজনীতিতেও তুমুল আলোড়ন তোলে। তবে একেবারে সম্প্রতি  তিনি বিচারপতি পদে মেয়াদ ফুরনোর মাসপাঁচেক আগেই স্বেচ্ছাবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন ও তার পর বিজেপিতে যোগ দেন। তার পর তাঁর 'রায়'-র নিরপেক্ষতা নিয়ে আরও বেশি করে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। পাল্টা দুর্নীতি প্রশ্নে গত কাল, কাওয়াখালির সভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধেও সরব হতে শোনা যায় তাঁকে। 


আর যা বললেন মুখ্যমন্ত্রী...
নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ নিয়েও এদিন তীব্র সুর চড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  'গতকাল একজন নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বাংলাকে জোর করে দখল করার প্রচেষ্টা মানতে পারেননি বলেই তিনি পদত্যাগ করেন। নির্বাচনের নামে কলঙ্ক, সব দখল করতে চাইছে', অভিযোগ করেন তৃণমূলনেত্রী। সঙ্গে প্রশ্ন, 'যাঁদের কথার দাম নেই, তাঁদের আবার কীসের গ্যারান্টি?' রাজ্যের ৫৯ লক্ষ মানুষকে মোদি সরকার যে ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয়নি, সে ব্যাপারেও আক্রমণ শানান তৃণমূলনেত্রী। তবে একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ৫০ দিনের কাজের ব্যবস্থা তাঁর সরকারই করবে।


আরও পড়ুন:রায়বরেলীতে প্রিয়ঙ্কা, একসঙ্গে দুই কেন্দ্রে প্রার্থী রাহুল, লোকসভা নির্বাচনে চমক কংগ্রেসের?