এগরা ও পটাশপুর: একুশের বিধানসভা ভোটের মুখে এবার বিজেপি নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছে পরিবর্তনের ডাক। শুক্রবার পটাশপুরের সভা থেকে এনিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে ভোটের প্রচারে তিনি দিলেন দিল্লিতে পরিবর্তনের ডাক।


২০১১ সালে পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যজুড়ে ছিল পরিবর্তন চাই পোস্টার।এক দশক পর বিধানসভা ভোট যখন দোরগোড়ায়, তখন আবারও শোনা যাচ্ছে সেই পরিবর্তনের ডাক। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেই পরিবর্তন-অস্ত্রেই ধার দিচ্ছে বিজেপি। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থেকে পরিবর্তনের ডাক দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপিতে গিয়ে ফের পরিবর্তনের পরিবর্তন চাইছেন। তিনি জনসভাগুলিতে বলছেন, রাজ্যে পরিবর্তনের পরিবর্তন চাই।


ব্রিগেড থেকে প্রধানমন্ত্রী  নরেন্দ্র মোদির মুখে শোনা গেছে রাজ্যে আসল পরিবর্তনের কথা। তিনি বলেছিলেন, অনেক আশা নিয়ে রাজ্যের মানুষ বাম সরকারকে হঠিয়ে পরিবর্তন এনেছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার মানুষের আশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই রাজ্যে দরকার আসল পরিবর্তন।


শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের সভা থেকে এনিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলায় এসে আসল পরিবর্তনের ডাক দিচ্ছেন, তখন তৃণমূলনেত্রী দিল্লির উদ্দেশে হুঙ্কার ছেড়েছেন।


WB election 2021:‘চোর, চিটিংবাজ, গদ্দার, মীরজাফর’ শুভেন্দুর জেলায় দাঁড়িয়ে দলত্যাগীদের নিশানা মমতার


এগারোর পর একুশে কি ফের পরিবর্তন দেখবে বাংলা? নাকি হ্যাটট্রিক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? উত্তর মিলবে দোসরা মে।


একদশক পর বিধানসভা ভোটের মুখে ফের রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলেছে পরিবর্তনের ডাক। তবে এবার তা শোনা যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের মুখে। শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের সভা থেকে তা নিয়ে কড়া জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


BJP Manifesto 2021: ২১ মার্চ অমিত শাহর উপস্থিতিতে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ বিজেপির


মোদীকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রীর কটাক্ষ, দু’লাইন বাংলা লিখে নিয়ে এসে বলে কেমোন আছ বাংলা? পরিবর্তন তো আমাদের স্লোগান।স্লোগান চুরি করে এখন পরিবর্তনের কথা বলছে বিজেপি। বাংলায় জিতে দিল্লিতে পরিবর্তন আনবে তৃণমূল।


ভোটলুঠের আশঙ্কায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সতর্ক থাকার বার্তাও দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বললেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর ভরসা না করে নিজেরাই ভোটবাক্সের পাহারা দিন। ইভিএম খারাপ বললে, আবার পরীক্ষা করান। পটাশপুরের সভা থেকে চারদফা সতর্কবার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী।


নন্দীগ্রামে কেন প্রার্থী হয়েছেন, সেই ব্যাখ্যাও এদিন এগরার সভা থেকে দিয়েছেন মমতা। বলেছেন,  নন্দীগ্রাম থেকে ভূমি আন্দোলনের শুরু হয়েছিল। নন্দীগ্রামে এবার প্রার্থী আমি।অনেকে বলেছিল কেন নন্দীগ্রাম থেকে লড়ছ? আমি বলেছি, বাংলার যে প্রান্তেই সেটাই আমার ঘর।


নন্দীগ্রামে এবার তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী একদা ঘনিষ্ঠ সহযোগী শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও তৃণমূলের আরও অনেক নেতা এবার শিবির বদলে পদ্ম শিবিরে প্রার্থী। এই বিষয়ে মমতা বলেছেন,গদ্দাররা ছিল, অনেক বেইমানি করেছে, এবার আর হবে না।গদ্দাররা, মিরজাফররা এবার বিজেপির প্রার্থী।


প্রার্থীতালিকা নিয়ে বিজেপির ঘরের দ্বন্দ্বকেও কটাক্ষ করেছেন  তৃণমূল নেত্রী । বলেছেন, বিজেপির পুরনো লোকেরা নেই, ঘরে বসে কাঁদছে।সিপিএমের হার্মাদ ও তৃণমূলের কিছু লোক বিজেপিতে গিয়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছে।


মমতা দলত্যাগীদের নিশানা করে বলেছেন, কিছু গদ্দারকে অন্ধের মত ভালবাসা দিয়েছি।


জনসভায় তাঁর সরকারের কৃতিত্বের কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন,মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আমরা চালু করছি।


ফের সরকারে এলে তাঁর সরকার কী কী কাজ করবে, সেই প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করে মমতা বলেছেন, আমরা সরকারে থাকলে আবার দুয়ারে সরকার আসবে। কৃষকদের দশহাজার টাকা করে দেওয়া হবে।তিনি বলেছেন, দ্বাদশের ছাত্র-ছাত্রীদের স্মার্ট ফোনের জন্য দশহাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। মৎসজীবীদের জন্য সাড়ে তিন লক্ষ পুকুর কাটা হয়েছে।মাছের চাষ ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। বিজেপি সরকার কোনও উন্নয়ন করেনি।মমতা বলেছেন, আমি চাই না আমার বাংলার কোনও মানুষের নাম বাদ যাক। আমি এরাজ্যে এনপিআর হতে দেব না।


 মমতা এদিন আরও বলেছেন,  বামপন্থীদের দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না। ‘কংগ্রেসকে দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না।