সৌভিক মজুমদার, সন্দীপ সমাদ্দার, দীপক ঘোষ: বিধানসভা ভোটের মুখে হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল তৃণমূল।  ভোটে অংশ নিতে পারবেন না পুরুলিয়ার জয়পুরের তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার। 


সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সিলমোহর পড়ল নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে।  এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন মনোনয়ন বাতিল হওয়া তৃণমূল প্রার্থী। 


২৭ মার্চ প্রথম দফাতেই ভোট হবে পুরুলিয়ার জয়পুর বিধানসভা কেন্দ্রে। আড়ষা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি উজ্জ্বল কুমারকে টিকিট দেয় তৃণমূল। 


মঙ্গলবার নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেন উজ্জ্বল। স্ক্রুটিনিতে ত্রুটি ধরা পড়ায় তা সংশোধন করতে বলা হয়।  সংশোধনের পর বুধবার ফের তা জমা দেন তৃণমূল প্রার্থী। কিন্তু, দ্বিতীয় বারেও ত্রুটি ধরা পড়ে। এরপরই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।


আরও পড়ুন:


WB Election 2021: জয়পুরের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন: হাইকোর্টের রায়কে ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ কমিশনের


কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা করেন উজ্জ্বল কুমার।  বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়। 


তখন বিচারপতি নির্দেশ দেন, পুরনো মননয়নপত্রের ভিত্তিতেই তৃণমূল প্রার্থীকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিতে হবে। সিঙ্গল বেঞ্চের এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় নির্বাচন কমিশন। 


শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেই শুনানি হয়। সেখানে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী দাবি করেন, ভোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত। সেখানে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ভোট মিটে যাওয়ার পর ইলেকশন পিটিশনের মাধ্যমে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে হবে। 


পাল্টা তৃণমূল প্রার্থীর আইনজীবী কপিল সিব্বল অন্য যুক্তি খাঁড়া করেন। তিনি বলেন, আমরা কোনওভাবেই ভোট প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছি না। তৃণমূল প্রার্থী শুধুমাত্র ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছেন, কারণ খুব সামান্য ত্রুটির কারণে প্রার্থীপদ খারিজ করা হয়েছে।


 



 


দুপক্ষের বাদানুবাদের শেষে, প্রধান বিচারপতির নির্দেশ দেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সেই সঙ্গে খারিজ করা হল সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে।


তাৎপর্যপূর্ণভাবে শুক্রবারই ছিল জয়পুর কেন্দ্রে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। এরফলে জয়পুর কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা কার্যত আর রইল না। সেক্ষেত্রে ২৯১ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও, ভোটে লড়বেন ২৯০ জন প্রার্থী।


এই প্রেক্ষিতে পুরুলিয়া তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেন, আমরা আইনের প্রতি সন্মান জানাচ্ছি আর বিশ্বাস থেকে বলছি উনার নমিনেশন হবে না। আজকেই লাস্ট ডেট। আর সময় নেই আমরা এটাকে নিয়ে কোর্টে যাবো আর সময় নেই আপাতত ঐখানে আর আমাদের প্রতীকী প্রার্থী থাকছে না। উনার হলফ নামায় তারিখ সংক্রান্ত একটি বিষয় ছিল। কমিশন এত বেশী গুরুত্ব দিয়ে দেখবে আমরা ভাবতেই পারিনি।


হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল সুপ্রিম কোর্টে যায় কি না, সেটাই দেখার।