নয়াদিল্লি: আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাকি লোকসভা নির্বাচনে। তার আগে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন থেকে ইস্তফা দিলেন অরুণ গোয়েল। নির্বাচন  কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। এর ফলে, বর্তমানে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চে মাত্র একজন সক্রিয় সদস্য রয়ে গেলেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। আগামী সপ্তাহে লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়া নিয়ে যখন জোর জল্পনা, সেই আবহে কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। (Election Commission)


নির্বাচনের ঠিক আগে আচমকা কেন ইস্তফা দিলেন গোয়েল, তার কারণ স্পষ্ট নয় এখনও পর্যন্ত। কারণ নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ৬১ বছর বয়সি গোয়েলের কার্যকালের মেয়াদ ছিল ২০২৭ সাল পর্যন্ত। রাজীব কুমারের পর মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার কথাও ছিল তাঁর। আগামী বছরই কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে রাজীব কুমারের। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে গোয়েল ইস্তফা দেওয়ায় বেনজির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কারণ নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের তৃতীয় পদটিও ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে অবসর নেন অনুপ পাণ্ডে। তার পর থেকে রাজীব কুমার এবং অরুণই যাবতীয় দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। আগামী সপ্তাহে জম্মু ও কাশ্মীরও যাওয়ার কথা ছিল, যাতে সেখানে নির্বাচন করানো নিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখা যায়। তার পরই লোকসভার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের কথা ছিল। একজনের পক্ষে সবকিছু সামাল দেওয়া সম্ভব নয় আপাতত। (Lok Sabha Elections 2024)


এখনও পর্যন্ত যে খবর মিলছে, সেই অনুযায়ী, সরকার অন্য কাউকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করতে চলেছে। বেশ কিছু বিষয়ে মতানৈক্য দেখা দিচ্ছিল। যদিও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েই পদ ছাড়েন গোয়েল। পরে হয়ত এ নিয়ে বিবৃতি দেবেন রাজীব কুমার। তবে আপাতত শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ সেরে ফেলাই লক্ষ্য কেন্দ্রের। 


আরও পড়ুন: SBI Electoral Bonds: ভোটের আগে BJP-কে বাঁচানো লক্ষ্য, তাই তথ্য নিয়ে গড়িমসি, নির্বাচনী বন্ড নিয়ে প্রশ্নের মুখে SBI


এর আগে, গত বছর কেন্দ্রীয় সরকার নয়া আইন প্রবর্তন করে, যার আওতায় নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে আর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রয়োজন পড়বে না। প্রথমে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক এবং দুই সচিব পাঁচ প্রার্থীকে বেছে নেবেন। তার পর  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং মোদি মনোনীত কেন্দ্রীয় একজন মন্ত্রী ওই পাঁচ জনের মধ্যে থেকে একজনকে সুপারিশ করবেন। সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু


সংখ্যার জোরে এই আইন পাশ করিয়ে নিলেও, মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ প্রধান বিচারপতিকে কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সুপারিশ করা প্রার্থীরই পাল্লা ভারী। কমিটিতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাই ওই কমিটির নির্বাচিত ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কতটা নিরপেক্ষ হবেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।