তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: 'রক্তবীজ' (Roktobeej)-কে পছন্দ করার কারণ? পর্দায় সংযুক্ত মিত্র হেসে বললেন, 'স্ক্রিপ্ট, স্ক্রিপ্ট আর স্ক্রিপ্ট।' বেশ অনেকদিন পরে পুজোর সময় ছবি মুক্তি পাচ্ছে তাঁর। তাও 'উইন্ডোজ' (Windows) -এর ছক ভেঙে থ্রিলার (Thriller)। ছবি থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে মতামত, রাজনীতি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবন... প্রচারের ব্যস্ততার ফাঁকেই এবিপি লাইভের (ABP Live) সঙ্গে একটুকরো আড্ডায় প্রাণখোলা মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)।
চিত্রনাট্য শুনেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, এই ছবি তিনি করবেনই। 'রক্তবীজ' (Roktobeej) নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মিমি বলছেন, 'রক্তবীজে সংযুক্তা মিত্রের চরিত্রটা চিত্রনাট্যে এত সুন্দরভাবে লেখা হয়েছে, প্রথম ড্রাফট পরেই বলেছিলাম আমি এই ছবিটা ছাড়ছি না। তারপরে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ স্ক্রিপ্ট তৈরি হয়েছে। চরিত্রটা করা নিয়ে দ্বিতীয়বার কখনও ভাবিনি। সংযুক্তা মিত্র আর পঙ্কজ সিংহ হল এমন দুটো চরিত্র, যাদের চোখ দিয়ে সম্পূর্ণ ছবিটি দেখবেন দর্শকেরা।'
ইদানিং তুলনায় কম ছবি মুক্তি পাচ্ছে মিমির। নায়িকা কী খুব বেছে চিত্রনাট্য পছন্দ করছেন? মিমি বলছেন, 'একটা সময় বছরে ৫টা ছবিতে কাজ করেছি। মনে হত কারোও জন্য কিচ্ছু ছাড়ব না। সব পরিচালক, সব ছবি করব। এখন চিত্রনাট্য আসলে গল্পটা দেখি, আমার চরিত্র কতটা সেই চিত্রনাট্যে রয়েছে, চরিত্রটা আমায় কতটা ভাঙতে পারবে, ছবির প্রচার কীভাবে হচ্ছে.. এগুলো নিয়ে ভাবি। অনেক ছবি হলে এসে চলে যাচ্ছে, কেউ জানতেও পারছে না। সেই ছবির অংশ না হয় নাই হলাম। একটু কম কাজ করলাম কিন্তু ভাল কাজ করলাম।'
দর্শকদের পছন্দ নাকি মিমির পরিণতি বোধ, কোনটা চিত্রনাট্য বাছার সময় বেশি ভাবায়? নায়িকা বলছেন, 'আগে ৫টা ছবি মুক্তি পেলে ৪টে ছবি হিট হত। ফ্লপের কোনও চান্সই নেই। এখন ছবি, ছবির বিষয়.. সবকিছু সংগ্রাম করছে। ওটিটি এসে গিয়েছে। বড় বড় ছবি বাড়িতে, টিভিতে বসে দেখা যাচ্ছে। মানুষ যাতে প্রেক্ষাগৃহে যায়, এমন ছবি বানাতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিতে একটা বড় বদল এসেছে। আমরা যখন থেকে ইন্ডাস্ট্রিকে দেখেছি, তখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। সেখান থেকে এখন রমরমিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া চলছে। আমি খুব একটা ভেবেচিন্তে যে চিত্রনাট্য বাছি তা নয়, তবে একটু থেমে কাজ করি। একসঙ্গে ৫টা কাজ আর করতে পারি না কারণ মন দিতে পারি না। আগে ছবির জন্য এতটা হোমওয়ার্কের প্রয়োজন হত না। মানুষ আগে বড়পর্দায় দেখত আমাদের, এখন ফোনে দেখছে। এতটাই দর্শকদের কাছে চলে গিয়েছি। প্রেশারটা বেড়ে যায়, মনে হয় ১০০ শতাংশ দিই নিজের। প্রতিযোগিতা বেড়ে যায় যখন লাইনে লাইনে আরও ৫০০০ জন দাঁড়িয়ে রয়েছে যাঁরা তোমার চেয়েও ভাল কাজ করতে পারবে। মনে হয়, কখনও নিজের কোনও বিকল্প তৈরি হতে দেওয়া উচিত না।'
খ্যাতি পাওয়ার লড়াইয়ের চেয়েও কি খ্যাতি বজায় রাখার লড়াইটা কঠিন? মিমি বলছেন, 'শুনেছিলাম ওপরখটা খালি হয়। সেটা অবশ্য অনুভবও করি। আমি একেবারেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি না। কখনও মনে করি না লড়াইটা লড়ে যেতেই হবে। আমি যদি আমার কাজে কঠিন পরিশ্রম করি, তার কোনও বিকল্প হতে পারে না। কাজ নিয়ে খাটলে সেটা প্রতিফলিত হবেই। এটাই আমার জীবনের নীতি। কিছুর জন্য যুদ্ধ করি না, জীবন যেভাবে আমার কাছে আসে, মেনে নিই। ব্যাস.. আর কিছু ভাবার থাকে না।'
আরও পড়ুন: Abir Chatterjee Exclusive: বলিউডের অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে রক্তবীজে, গোঁফটা কিন্তু নিজের, বলছেন আবির