কলকাতা: বাইরের তাপমাত্রা মাইনাস ২৪ ডিগ্রি, বাসিন্দারা কেউ তাঁদের বাড়ির রান্নাঘরের বাইরে বেরোচ্ছেন না। সেখানেই আগুন জ্বলে, রান্না হয়, আগুনের আঁচে গা সেঁকেন আট থেকে আশি। এটাই নিয়ম। সেখানে হঠাৎ হাজির শ্যুটিংয়ের এক দল। রোজ নাকি ১৪ ঘণ্টা শ্যুটিং চলবে, সকাল থেকে রাত। স্থানীয়রা শুনে অবাক, হেসেও ফেললেন কিছুজন। কী করে সম্ভব এটা! কিন্তু সত্যিই রোজ শ্যুটিং শুরু করলেন তাঁরা। হাজার প্রতিকূলতা, পরিবেশের সঙ্গে লড়াই..তৈরি হল সিনেমা। কিন্তু সিনেমার পিছনেও যে সিনেমাটিক গল্প থাকে, যা সাধারণ মানুষের অজানাই থেকে যায়? এবিপি লাইভকে সেই গল্পই শোনালেন 'মিশন এভারেস্ট'-এর নায়িকা চান্দ্রেয়ী ঘোষ (Chandreyee Ghosh)।


বাস্তবের এভারেস্টকে ছুঁয়ে আসা বাঙালি কন্যা সুনীতা হাজরার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে দেবাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি 'মিশন এভারেস্ট'। এই ছবির মুখ্যভূমিকায় দেখা যাবে চান্দ্রেয়ী ঘোষকে। 


জানুয়ারি মাসে শ্যুটিং.. স্পিতি আর লাদাখে তখন তাপমাত্রা মাইনাস ২৪। রোজ ভোর ৪টেয় কলটাইম থাকত আর ৬টার সময় শুরু হল শ্যুটিং। চান্দ্রেয়ী বলছেন, 'আমি আর আমার সহ অভিনেত্রীর জন্য বরাদ্দ থাকত ছোট্ট একটা বালতি জল। সেই জল মাটিতে পড়লেও চোখের নিমেষে বরফ হয়ে যেত ঠান্ডায়। আমরা একজন পর্বতারোহীর মতোই পোশাক ব্যবহার করেছিলাম, তার ভারও কম নয়। একটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল মেকআপের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। নাক, গাল ফেটে যাচ্ছে ঠাণ্ডায় সেই সমস্ত পরিস্থিতিকে অভিনয়ে, মেকআপে, সংলাপে ফুটিয়ে তোলা নেহাত সহজ নয়।'


আরও পড়ুন: Haami 2: আকাশে শিবপ্রসাদ, নন্দিতা, গার্গীর 'হামি ২' ঘুড়ি, 'ভুটুর মতোই ভালোবাসা পাবে নতুন খুদেরা' আশা সবার


এই সফরে ক্যামেরার পিছন থেকে টিম 'মিশন এভারেস্ট'-এর সঙ্গ দিয়েছেন সুনীতা হাজরার স্বামী সুদেব। তিনিও পেশায় পর্বতারোহী। চান্দ্রেয়ী জানাচ্ছেন, সুনীতা আর তিনি দুজনেই পর্বতারোহনে মন দিয়ে ঘর সামলাবে কে? সুনীতার স্বপ্নপূরণ করতে তাই পর্বতারোহন ছেড়েছেন সুদীপ। তাঁর নিজস্ব একটি পর্বতারোহনের শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে একটি দলকে শ্যুটিংয়ের দলের সঙ্গে পাঠিয়েছিলেন সুদেব। লকডাউনের জন্য ছবির শ্যুটিংয়ে ব্যাঘাত হয়েছিল। খুনসুটি করে চান্দ্রেয়ীর মন্তব্য, 'এই ছবির নাম 'মিশন এভারেস্ট' না হয়ে এই ছবিটার নাম 'মিশন ইম্পসিবল'-ও হতে পারত।'


এই ছবিতে গানের ব্যবহার রয়েছে। চান্দ্রেয়ী বলছেন, 'এই ধরণের ছবিতে গান ব্যবহার করলে অনেকসময় অনর্থক বলে মনে হয়। কিন্তু কলকাতা থেকে বেসক্যাম্পের সফরটা দেখানোর সময় এই ছবিতে গান ব্যবহার করা হয়েছে। এই ছবির প্রতিটা চরিত্রের এক একটা গল্প আছে। সেটা ভারি সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গানে।'