মুম্বই : ২০১৫ সালে 'দম লাগাকে হইশা' দিয়ে শুরু। প্রথম ছবির জন্যই ১২ কেজি ওজন বাড়িয়েছিলেন নবাগতা ভূমি পেডনেকর। তথাকথিত 'নায়িকা' সুলভ চেহারার ইমেজ ভেঙে নজর কেড়েছিল পর্দার সন্ধ্য়া ভার্মা। প্রথম সিনেমা হিট। এরপর ২০১৭-এ দ্বিতীয় ছবি 'টয়লেট-এক প্রেম কথা'। বেশ কিছুটা মেদ ঝরিয়ে পর্দায় নতুন রূপে দেখা যায় ভূমিকে। এরপর একটার পর একটা। চরিত্রের খাতিরে নানান ছবিতে নানান শেপে দেখা গেছে তাঁকে। ফলে বলাই বাহুল্য, খাবার এবং হেল্থি ডায়েটের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক। আর সময়ের সঙ্গে যা বদলেছে ক্রমশ।


ছবির জন্য কখনও রোগা তো কখনও মোটা। শরীরের গঠন বদলাতে হয় এতবার যে ফিট থাকার বিষয়ে কোনও কার্পণ্য করেন না ভূমি। তিনি নিজের মন-মাথাকেও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। প্রথমে ব্যাপারটা আমার কাছে কেবল ওজন কমানো বা বাড়ানোতেই সীমাবদ্ধ ছিল। অভিনয় জগতে পা রেখে বুঝলাম, আমাদের পর্দায় কেমন দেখতে লাগবে তা নির্ভর করে আমাদের খাওয়া দাওয়া, এক্সারসাইজ, স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের উপর। জানাচ্ছেন ভূমি। তিনি আরও বলেন, তাঁর ট্রেনার জোর দেন মেটাবলিজম ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপর।


ভূমির খাদ্যতালিকায় সবসময় বিপুল পরিমাণ প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট থাকে। অবশ্যই তা এক্সপার্টদের তৈরি করা চার্ট। তবে ভূমির টোটকা, যে জিনিসটা গোটা জীবন আমাদের সঙ্গে থাকবে, সেটা ভাল রাখার কোনও শর্টকাট হয় না। এটা একটা ধীর প্রক্রিয়া। সবশেষে ভূমির মন্তব্য, 'খাবার আর আমার সম্পর্ক, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হয়েছে'। ভূমির খাদ্যযাত্রা খোঁজ পাওয়া গিয়েছে এক ডিজিট্যাল ফুড শোয়ের শেষ পর্বে। সেখানে এসেই খাবারের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্কের কথা শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী। পছন্দের ফুড ডেস্টিনেশন, খাবার নিয়ে নানা স্মৃতি থেকে শুরু করে কেন খাবার তাঁর জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সব কথাই জানান তিনি। 


ভার্চুয়ালি এপিসোড শুট শেষ করে সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করেন অভিনেত্রী। ভেবেছিলাম রান্না করা বেশ কঠিন একটা কাজ। তবে যদি ঠিক মতো শিখিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে একেবারেই কঠিন না, উপলব্ধি অভিনেত্রীর। আমি নিজে রান্না করতে পারি না, কিন্তু আমি ভীষণ খেতে ভালবাসি। জানান ভূমি। অভিনেত্রীর মতে, রাঁধুনি হিসেবে নিজের উপর একেবারেই বিশ্বাস ছিল না তাঁর। কিন্তু পাস্তা রান্না করতে গিয়ে তিনি আবিষ্কার করেন যে কিছু কিছু উপকরণ আছে যেগুলো ব্যবহার করলে কখনও কোনও খাবার খারাপ খেতে হতেই পারে না। মাখন, রসুন, মাশরুম, অ্যাসপারাগাস সসে তৈরি পাস্তা বেশ লোভনীয় হয়েছিল তা তাঁর কথা থেকেই বেশ স্পষ্ট। 


ভূমির পছন্দের ফুড ডেস্টিনেশন 


খাবারের ব্যাপারে ভূমি পেডনেকরের প্রিয় গন্তব্য মেক্সিকো ও জাপান। তাঁর মতে ভারতে যা মেক্সিকান বা দক্ষিণ আমেরিকার খাবার পাওয়া যায়, তাতে সেরকম বৈচিত্র্য নেই। ফলে তিনি যে কোনও সময় মেক্সিকোয় 'ফুডট্রিপ' করতেও রাজি। মেক্সিকো গিয়ে তাদের খাবার আর সংস্কৃতিকে ভালবেসে ফেলেছিলেন ভূমি। যদিও তাঁর বক্তব্য, জাপানি এবং এশিয়ান খাবারের অনেক অপশন পাওয়া যায় ভারতে। সুস্বাদু এবং একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর। সেই কারণেই এশিয়ার খাবার এত বেশি আকর্ষণ করে তাঁকে।


খাবার সংক্রান্ত সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতি


প্রশ্ন শুনে নিউ ইয়র্কের গল্প শুনিয়েছেন নায়িকা। ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পছন্দের জায়গা তাঁর। সেখানে গেলেই লম্বা রাস্তা ধরে হাঁটা মাস্ট। নিউ ইয়র্কের পিৎজা তাঁর খুব পছন্দের। স্মৃতি ঘেঁটে বলতে থাকেন, সেখানে প্রায় প্রত্যেক গলিতেই একটা করে পিৎজার দোকান আছে। তিনি নাকি সেখানকার সবচেয়ে ভাল পিৎজার দোকানগুলোয় যান। প্রত্যেক জায়গা থেকে একটা করে আলাদা টপিংয়ের পিৎজার স্লাইস খান। বন্ধুরা এমন কাণ্ড দেখে মজাও করেন। তবে আক্ষেপ নেই নায়িকার। তাঁর বক্তব্য, টপিংগুলো এত ভাল, কী করেই মিস করা যায়? বলতে বলতে নিজেই হেসে ফেলেন তিনি।