কলকাতা: ফিকে হলুদ আলোর ঘরে দুটো শ্যাওলা রঙের সোফা মুখোমুখি পাতা। তিনি সোফায় বসলে কেমন হবে, সেই আন্দাজে ঠিক করে নেওয়া গেল ক্যামেরার ফোকাস। কয়েক মিনিট পরেই ঘরে ঢুকলেন তিনি। গাঢ় ছাইরঙা সোয়েট শার্ট আর চোখে স্বচ্ছ ফ্রেমের চশমা। ল্যাপল লাগাতে লাগাতে প্রশ্ন করলেন, কোথায় বসব? তারপর সোফায় হেলান দিয়ে বসে সাক্ষাৎকার শুরু করার ইঙ্গিত করলেন। বেশি প্রশ্ন করতে হল না। কিনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের গল্প শোনাতে যেন মুখিয়ে ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)।


কাকাবাবুর শ্যুটিং মানেই অ্যাডভেঞ্চার। ঠিক কোন কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন ‘টলিউডের ইন্ডাস্ট্রি’? প্রসেনজিৎ বলছেন, ‘কাকাবাবুর শ্যুটিং মানে সবসময়েই রোমহর্ষক সব অভিজ্ঞতা। আমরা যখন ‘মিশর রহস্য’-এর জন্য ইজিপ্টে কাজ করেছি, সেটার অভিজ্ঞতা মনে রাখার মত ছিল। ‘ইয়েতি অভিযান’-এ শ্যুটিং করার স্মৃতিও ভয়ঙ্কর। কিন্তু ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’-এর স্মৃতি আরও ভয়ঙ্কর। কারণ এখানে আমার সহ অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কখনও চিতা, কখনও সাপ, কখনও হাতি বা গণ্ডার। আর সৃজিত মুখোপাধ্য়ায় কখনোই গ্রাফিক্সের সাহায্য নিয়ে কিছু তৈরি করেন না। একটা শটে, আমি আর সন্তু শুয়ে আছি আর আমার ঠিক ২ ফুটেরও কম দূরে হাতি দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনেক দূরে দূরে ৩টে ক্যামেরা। যদি হাতিটা এক-দু পা এগোয় তাহলেই আমার বা সন্তুকে পিষে দেবে। কিন্তু তারমধ্যেও কাকাবাবুকে জ্ঞান দিতে হবে, ইয়ার্কি করতে হবে সন্তুর সঙ্গে। কারণ সামনে একটা গণ্ডার আছে। গণ্ডার আর হাতির মাঝখানে কাকাবাবু আর সন্তু।‘


Jisshu Sengupta Exclusive: সরস্বতী পুজোয় বাড়ি থেকে বেরব না, যদি কাউকে পছন্দ হয়ে যায়: যীশু


এখানেই থামলেন না প্রসেনজিৎ। কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন তাঁর ঝুলি ভরে দিয়েছে গল্পে। ‘বুম্বা’ বলে চললেন, ‘ একটা শটে ছিল, গাছের ওপর চিতাকে দেখে আমরা নিজেদের লুকোচ্ছি। চিতাটার হঠাৎ হয়তো আমাক হাতের ক্রাচটাকে দেখে রিভালবার বা এমন কোনও অস্ত্র বলে মনে হয়েছে। সে হঠাৎ নেমে এসে আমাদের আশেপাশে ঘুরতে শুরু করল। প্রায় আমাদের চাটছে! সঙ্গের সবাই বলছে, ‘ডোন্ট মুভ স্যর, ডোন্ট মুভ (নড়বেন না স্যর)’। আমি বললাম, কী বলতে চাইছেন আপনারা! আর একটা বিশাল বড় সাপ আনা হয়েছিল। সেটাকে ধরে আমায় সন্তুর পা থেকে ছাড়াতে হবে। সৃজিত আর আরিয়ানের তো সাপটাতে কী পছন্দ। পারলে বিছানায় নিয়ে গিয়ে শোয়! আমায় বলেও ফেলেছিল একবার... আমি তো..’ হেসে ফেললেন প্রসেনজিৎ।