বলিউডে কাস্টিং কাউচের অন্ধকার দিক নিয়ে খোলামেলা কথা জানালেন রাধিকা আপ্তে ও ঊষা যাদব

মুম্বই: বিগত কিছুদিন ধরেই সিনেমা জগতে কাস্টিং কাউচ ও যৌন নির্যাতন নিয়ে খোলাখুলি তীব্র বিতর্ক চলছে। অনেক অভিনেত্রীই কোনও কিছুর পরোয়া না করেই প্রকাশ্যে কাস্টিং কাউচের বিরোধিতা করছেন। এই বিতর্ক নিয়ে বিবিসি একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছে। নাম বলিউড ডার্ক সিক্রেট। তথ্যচিত্রে অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তেও ঊষা যাদব ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাঁরা দুজনেই বলেছেন, এ ব্যাপারে নির্যাতিতা সাধারণত বিষয়টি নিয়ে খুব একটা নাড়াচাড়া করতে চান না। ঊষা যাদব তো এক চমকে দেওয়ার মতো কথাবার্তা বলেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁকে বলা হয়েছিল যে, কেরিয়ার তৈরি করতে চাইলে কোনও অভিনেত্রীর হাসিমুখে যৌন সম্পর্ক করা উচিত। রাধিকা আপ্তে এ ব্যাপারে খোলাখুলি অনেক কথা জানিয়েছেন আগেই। ওই তথ্যচিত্রে রাধিকা জানিয়েছেন, কেন অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়েও মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন। তিনি বলেছেন, 'ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু কিছু লোককে তো ভগবানের মতো পূজো করা হয়। ওই ব্যক্তিরা এতটাই ক্ষমতাশালী যে নির্যাতিতার মনে হয়, তাঁর কথা কেউ পাত্তা দেবে না। এছাড়াও আশঙ্কা থাকে যে, এ ব্যাপারে মুখ খুললে কেরিয়ারটাই বরবাদ হয়ে যাবে'। রাধিকা বলেছেন, হলিউডে যে রকম যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে #MeToo প্রচার শুরু হয়েছে, তেমনটা বলিউডে হলেও ভালো হত। মরাঠি সিনেমার জন্য পুরস্কার জয়ী ঊষা যাদব বলেছেন, একবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, সুযোগ দেওয়া হলে তিনি এর বদলে কী দেবেন। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, তাঁর কাছে দেওয়ার মতো কোনও টাকাপয়সা নেই। এ কথা শুনে তাঁকে বলা হয় যে, টাকাপয়সার কথা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে কোনও প্রযোজক বা পরিচালক বা উভয়েই শয্যাসঙ্গিনী হতে বলে, সে কথাই বলা হচ্ছে। ঊষা আরও বলেছেন, তাঁকে বলা হয়েছিল যে,কেরিয়ার তৈরি করতে চাইলে কোনও অভিনেত্রীর হাসিমুখে যৌন সম্পর্ক করা উচিত।  এতে  আপত্তি জানালে বলা হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে চাইলে এই মনোভাব সঠিক নয়। উল্লেখ্য, কাস্টিং কাউচ নিয়ে বিগত কিছুদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। তেলগু অভিনেত্রী শ্রী রেড্ডির এর প্রতিবাদে অভিনব প্রতিবাদ করেছিলেন। এরপর তাঁর সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন আরও কয়েকজন তেলগু অভিনেত্রী। বিতর্ক আরও বাড়িয়ে বলিউডের বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার সরোজ খান বলেছিলেন, এতে তো কমপক্ষে রোজগারের বন্দোবস্ত হয়, ধর্ষণ করে ছেড়ে দেওয়া হয় না। পরে সরোজ খান ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বিবিসি-র তথ্যচিত্রটি রজণী বৈদ্যনাথন তৈরি করেছেন। আগামী ২৮ এপ্রিল ওই তথ্যচিত্র মুক্তি পাবে।