নয়াদিল্লি: গত সপ্তাহে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছে। আর তারপরই হিন্দি সংবাদপত্রের একটি স্ক্রিনশট সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি প্রার্থী নবনীত রানা, অজয় টেনি, মাধবী লতা এবং কংগ্রেস প্রার্থী কানহাইয়া কুমার সংশ্লিষ্ট লোকসভা কেন্দ্রে একই ভোটের ব্যবধানে (১৯,৭৩১ ভোট) পরাজিত হয়েছেন। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই পোস্টে ইভিএম মেশিনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।


পিটিআই ফ্যাক্ট চেক ডেস্ক ভাইরাল এই ছবির তদন্ত করে। তাতে এই ছবি ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়েছে। ৫ জুন রাজস্থান পত্রিকার ইন্দোর এডিশনে এই ভুল পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়। সেই স্ক্রিনশট মিথ্যে দাবি করে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। 


দাবি: 


নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে হরেন্দ্র সাহনি ওই ভাইরাল স্ক্রিনশট দিয়ে লিখেছেন, "আরও সতর্ক হয়ে সংবাদপত্র পড়া উচিত! এতে বলা হয়েছে চার প্রার্থী একই সংখ্যক ভোটে জিতেছেন বা হেরেছেন... সংখ্যাটা ১৯৭৩১? এটা নিছকই কাকতালীয় নাকি পরীক্ষা? মানুষের কাছে ইভিএম এবং নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে এই ফলাফল নজর দেওয়া উচিত। ইভিএমে সেটিং আছে! তাই আমি বারবার বলি, ইভিএম চিরতরে বাতিল করতে হবে।” আর্কাইভ লিঙ্ক এবং স্ক্রিনশট এখানে দেখুন।




আরও এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ওই সংবাজপত্রের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, কে বলেছে এবার ইভিএমে কারচুপি হয়েছে। সাধারণ মানুষের সংবাদপত্র পড়া উচিত। এই চার প্রার্থী একই ভোটে জিতেছেন বা হেরেছেন। ১৯৭৩১ এই সংখ্যাটা কী বলছে? ইভিএম হল সেটিং। পোস্টের লিঙ্ক, আর্কাইভ লিঙ্ক এবং স্ক্রিনশট এখানে দেখুন।




 


তদন্ত: 


ভাইরাল পোস্টে সত্যতা যাচাই করতে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ের ব্যবধান দেখা হয়। সেখানে দেখা যায়, মহারাষ্ট্রের অমরাবতী লোকসভা আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী নবনীত রানা, কংগ্রেস প্রার্থী বলওয়ান্ত বসবন্ত ওয়াংখেড়ের কাছে ১৯, ৭৩১ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। পরিসংখ্যান দেখতে এখানে ক্লিক করুন




উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরি আসন থেকে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী উৎকর্ষ ভার্মা মধুর কাছে ৩৪, ৩২৯ ভোটে হেরেছেন বিজেপি প্রার্থী অজয় ​​টেনি। পরিসংখ্যান দেখতে এখানে ক্লিক করুন 




নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী হায়দরাবাদে মাধবী লতা পেয়েছেন ৩,২৩,৮৯৪ ভোট। তাঁর নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী আসাউদ্দিন ওয়েসি পেয়েছেন ৬,৬১,৯৮১ ভোট। অর্থাৎ মাধবী লতা ৩,৩৮,০৮৭ ভোটে হেরেছেন। পরিসংখ্যান দেখতে এখানে ক্লিক করুন




উত্তর পূর্ব দিল্লি থেকে কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করেছিলেন কানহাইয়া কুমার। বিজেপি প্রার্থী মনোজ তিওয়ারির কাছে ১,৩৮,৭৭৮ ভোটে হেরে যান তিনি। পরিসংখ্যান দেখতে এখানে ক্লিক করুন




ভাইরাল ওই সংবাদপত্রের অংশ গুগল লেন্সে ফেলে দেখা যায়, ৫ জুন প্রকাশিত রাজস্থান পত্রিকার ইন্দোর এডিশনের প্রথম পাতার সঙ্গে ভাইরাল ছবির মিল রয়েছে। দেখা গিয়েছে চার প্রার্থী ১৯,৭৩১ ভোটে হেরেছেন। যদিও ওই সংবাদপত্রের অন্য এডিশনে সঠিক পরিসংখ্যানের উল্লেখ রয়েছে। ভাইরাল স্ক্রিনশট, ইন্দোর সংস্করণের স্ক্রিনশট এবং জয়পুর সংস্করণের ই-পেপারের স্ক্রিনশট দেখুন। 




 


পিটিআই ফ্যাক্ট চেক ডেস্কের তরফে রাজস্থান পত্রিকার ইন্দোর ব্যুরোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাদের থেকে কোনও বার্তা পেলেই এই প্রতিবেদনও আপডেট করা হবে। এই তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে বিজেপি প্রার্থী নবনীত রানা, অজয় টেনি, মাধবী লতা এবং কংগ্রেস প্রার্থী কানহাইয়া কুমার একই সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হননি। রাজস্থান পত্রিকার ইন্দোর সংস্করণে ভুল পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছিল। যার স্ক্রিনশট একটি মিথ্যে দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।


দাবি


বিজেপি প্রার্থী নবনীত রানা, অজয় ​​টেনি, মাধবী লতা এবং কংগ্রেস প্রার্থী কানহাইয়া কুমার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে একই ব্যবধানে (১৯,৭৩১ ভোট) পরাজিত হয়েছেন।


সত্যি


পিটিআই ফ্যাক্ট চেক ডেস্ক তদন্ত করে ভাইরাল দাবিটিকে ভুল বলে প্রমাণ করেছে।


শক্তি কালেক্টিভের অংশ হিসেবে Bhasha PTI-এর এই ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনটি শিরোনাম, এক্সার্পট-ব্যতীত বাকি অংশ যথাসম্ভব অপরিবর্তিত রেখে এবিপি লাইভ বাংলা কর্তৃক অনুবাদিত এবং অনুলিখিত।


আরও পড়ুন: Fact Check: মুসলিম-অধ্যুষিত লাক্ষাদ্বীপে মাত্র ২০১টি ভোট পেয়েছে BJP ?