কলকাতা: সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভারত সরকারের ক্যাবিনেট শিক্ষামন্ত্রীদের ধর্ম পরিচয় নিয়ে সাম্প্রদায়িক ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। ফেসবুকে পোস্টে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে স্বাধীনতার পর তিন দশক অর্থাৎ ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ভারতের সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা সবাই ছিলেন মুসলিম। আর তার ফলেই ভারতের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে বলে ওই ফেসবুক পোস্টের (Facebook Post) দাবি।


বুম যাচাই করে দেখে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ভারতের ১০ জন শিক্ষামন্ত্রীর মধ্যে ৫ জন ছিলেন মুসলিম সম্পদায়ের।


ভাইরাল (Viral in Social Media) হওয়া ফেসবকে ভুয়ো পোস্টে লেখা হয়েছে, "বিকৃত ইতিহাস কীভাবে হলো, চিন্তা করুন, আপনি কি যানেন! ১৯৪৭ থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত দেশের সমস্ত শিক্ষামন্ত্রী মুসলমান ছিলেন, তাঁর জন্য মুসলিম শাসকেরা ইতিহাস বইকে দখল করে নিয়েছে, সংস্কৃতি জিহাদের দ্বারা হিন্দু সভ্যতা ও রাজাদের বিবরণ মুছে ফেলেছে," (বানান অপরিবর্তিত)


পোস্টটি দেখা যাবে এখানে ও আর্কাইভ করা আছে এখানে




বুম যাচাই করে দেখে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সব শিক্ষামন্ত্রীরা ইসলাম ধর্মাবলম্বী বা মুসলমান সম্প্রদায়ের ছিলেন না। এই তথ্য যাচাই করতে গিয়ে বুম ভারতের শিক্ষামন্ত্রকের (সদ্য মানব সম্পদ বিভাগ থেকে পরিবর্তিত) ওয়েবসাইটিতে (hrm.mhrd.gov.in/) যায় এবং দেখে ভাইরাল পোস্টের দাবিটি সঠিক নয় ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষামন্ত্রীর ধর্ম পরিচয় ইসলাম ছিল না।


ভারতের শিক্ষামন্ত্রকের এই ওয়েবাসাইটটিতে ভারতের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীদের একটি তালিকা রয়েছে। তিনদশকের ওই সময় পর্বে মুসলিম মন্ত্রী ছিলেন ৫ জন।




শিক্ষামন্ত্রীদের মন্ত্রীত্বের সময়কাল সহ নাম দেওয়া হল— মৌলানা আবুল কালাম আজাদ (১৯৪৭-৫৮), হুমায়ুন কবীর (১৯৬৩ সালে মাত্র তিনমাসের জন্য), মোহমেদালি করিম চাগলা বা এম সি চাগলা (১৯৬৩-৬৬), ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ (নভেম্বর, ১৯৬৬ থেকে মার্চ, ১৯৬৭ মাত্র তিনমাসের জন্য) ও প্রোফেসর এস নুরুল হাসান (১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল)। ওই সময় পর্বে ৫ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষামন্ত্রীরা হলেন, ড. কে এল শ্রীমালি (১৯৫৮-৬২ প্রতিমন্ত্রী এবং ১৯৬২-৬৩ পূর্ণমন্ত্রী), ডঃ ত্রিগুনা সেন (১৯৬৭-৬৯), ডঃ ভি কে আর ভি রাও (১৯৬৯-৭১), সিদ্ধার্থ শংকর রায় (১৯৭১-৭২)।


১৯৭৭ সালে শেষ মুসলমান শিক্ষামন্ত্রী হন প্রোফেসর এস নুরুল হাসান। এরপর থেকে প্রায় ৫ দশকের বেশি সময় ধরে ২২ জন ভারতের শিক্ষাদপ্তরের (বা সাময়িকভাবে মানব সম্পদ দপ্তর) মন্ত্রী হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কোনও শিক্ষামন্ত্রী মুসলমান নন।


৩২ জন শিক্ষামন্ত্রীর মধ্যে মহিলা পূর্ণমর্যাদার মন্ত্রী ১ জন মানব সম্পদ দপ্তরের স্মৃতি জুবিন ইরানি (২০১৪-১৬) ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ১ জন শ্রীমতি শীলা কউল (১৯৮১-৮৪)।


শক্তি কালেক্টিভের অংশ হিসেবে বুম কর্তৃক প্রকাশিত এই ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছাড়া বাকি অংশ অপরিবর্তিত রেখে এবিপি লাইভ বাংলা কর্তৃক প্রকাশ করা হল।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: আমডাঙায় 'দাবাং' পুলিশ! তাড়া খেয়ে পাটক্ষেতে লুকোল দুষ্কৃতীরা