কলকাতা: ট্রেন দুর্ঘটনায় দুটো হাতই বাদ চলে গিয়েছিল। এর পর থেকে পাল্টে গিয়েছিল জীবনও। কিন্তু সেই দুই হাতই আবার ফিরে পেলেন এক রং মিস্ত্রি। মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে এমন মহিলার হাত কাজে লাগানো হল। সেই হাতগুলিকেই জুড়ে দেওয়া হয় এই ব্যক্তির বাদ কনুইয়ের কাছ থেকে। অবশেষে আগের মতো স্বাভাবিক হাত ফিরে পান ওই ব্যক্তি। সম্প্রতি দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে এই সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। যা দিল্লিতে প্রথম বলেই দাবি করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
কীভাবে জুড়ল হাত ?
৪৫ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি চার বছর আগে একটি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। দুর্ঘটনার জেরে তার দুই সাত বাদ যায়। আর্থিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত ছিলেন ওই ব্যক্তি। দুই হাত ছাড়াই কাটাতে হবে সারা জীবন। এমনটাই হয়তো ভেবেছিলেন। কিন্তু চার বছরের মাথায় অপ্রত্যাশিতভাবে চিকিৎসার সুযোগ এল। দুই হাতই ফিরে পেলেন ওই ব্যক্তি। দক্ষিণ দিল্লির একটি স্কুলের প্রশাসনিক প্রধান মীনা মেহতা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছিল। মারা যাওয়ার পর তার অঙ্গ অন্যকে দান করে দিয়ে যান তিনি। আর তার জেরেই হাত ফেরত পেলেন ওই রং মিস্ত্রি।
বাইল্যাটেরাল হ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্ট
দক্ষিণ দিল্লির এই স্কুলের প্রশাসনিক প্রধান মীনা মেহতা। তার মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়। তাঁর অঙ্গ পেয়েছেন চারজন। তার মধ্যে একজন হলেন গঙ্গারাম হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৪৫ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি। বাইল্যাটেরাল হ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্ট নামের একটি জটিল পরীক্ষা করা হয়। প্রসঙ্গত ওই মহিলার কর্নিয়া, লিভার ও কিডনি আরও তিন রোগীকে দেওয়া হয়। তারাও সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসার দীর্ঘ জটিলতা
তবে এসব কিছু করে ওঠা মোটেই সহজ ছিল না। চিকিৎসকদের একটি বড় দল এই অস্ত্রোপচার করেন। সব মিলিয়ে ১২ ঘন্টা সময় লাগে ওই অস্ত্রোপচার করতে। প্রতিটি স্নায়ু থেকে শিরা ও ধমনী অতি সাবধানে জুড়তে হয়েছে। এগুলির পাশাপাশি পেশি ও টেনডনকেও জুড়তে হয়। অঙ্গদাতার হাতটা রং মিস্ত্রির কনুইয়ের কিছুটা উপর থেকে জুড়ে দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১২ ঘন্টার অপারেশন শেষে সাফল্য আসে। অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সঙ্গে একটি ছবিও তোলেন সকল চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন - Health News: চোখের মধ্যে ৭০-৮০ পোকা ! রোগীকে বাঁচাতে কী করলেন মেডিকেলের চিকিৎসকেরা ?