কলকাতা: কোনও দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি হলে অনেক সময় সেই অঙ্গ চিকিৎসকরা কেটে বাদ দেন। কাটার প্রক্রিয়া খুব কষ্টকর না হলেও এর পর চলাফেরা মুশকিল হয়ে পড়ে। রোজকার কাজকর্ম করতে গিয়ে প্রায়ই সমস্যা হয়। অন্যের সাহায্য নিতে হয় অনেককে। তবে অনেক সময় অঙ্গ বাদ দিলেও ব্যথা থেকে যায় সেই অংশে। মাঝে মাঝে সেই ব্যথা ভীষণ তীব্র হয়ে ওঠে। তার জন্য মূলত দায়ী সেই অংশে থাকা বিভিন্ন স্নায়ুগুলি। কীভাবে কমানো যায়, সেই ব্যথা? সম্প্রতি এক গবেষণায় একটি বিশেষ অস্ত্রোপচার পদ্ধতির কথা জানালেন গবেষকরা।


কী বলছে গবেষণা?


আমেরিকান সোসাইটি অব প্লাস্টিক সার্জেনের মেডিকাল জার্নাল প্লাস্টিক অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারিতে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে গবেষকদের দাবি, অঙ্গ কেটে বাদ দেওয়ার সময় টার্গেটেড মাসল রিইননার্ভেশন (Targeted Muscle Reinnervation) বা টিএমআর পদ্ধতিটি করা হলে ব্যথা অনেকটাই কমানো যায়। অনেক সময় অঙ্গ বাদ দেওয়ার পর ওই অংশে অস্বাভাবিক স্নায়ু জন্মাতে থাকে। সেই স্নায়ুর বৃদ্ধিও আটকে দিতে পারে টার্গেটেড মাসল রিইননার্ভেশন প্রক্রিয়াটি। এতে কেটে যাওয়া অংশের পাশেই নতুন করে স্নায়ু তৈরি করা হয়। যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।


কী বলছেন গবেষক?


ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটি ওয়েক্সেনার মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসক অ্যামি এম মুর সংবাদমাধ্যম এএনআই-কে বলেন, গবেষণায় টিএমআর-এর গুরুত্ব প্রমাণিত। টার্গেটেড মাসল রিইননার্ভেশন নিউরোমা ফর্মেশন আটকে দেয়। পাশাপাশি ফ্যান্টম লিম্ব পেইন ও রেসিডুয়াল লিম্ব পেইন কমাতে সাহায্য করে টার্গেটেড মাসল রিইননার্ভেশন। নিউরোমা ফর্মেশন বলতে বোঝায় অস্বাভাবিক স্নায়ু জন্মানোর প্রক্রিয়া। কিন্তু ফ্যান্টম ও রেসিডুয়াল লিম্ব পেইন আদতে কী?


ফ্যান্টম ও রেসিডুয়াল লিম্ব পেইন কেন হয়?


রেসিডুয়াল লিম্ব পেইন বলা হচ্ছে যেখান থেকে অঙ্গটি বাদ দেওয়া হয়েছে, সেই অঙ্গের ব্যথাকে।  সেখানে যে অঙ্গটুকু রয়েছে, তার মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে এই ব্যথা হয়। অন্যদিকে ফ্যান্টম লিম্ব পেইন অনেকটাই মানসিক। অর্থাৎ মস্তিষ্ক বোঝাতে চায় যে অঙ্গটি নেই বলে ব্যথা হচ্ছে। যেটুকু অংশ নেই, সেটুকু না থাকার জন্যই এই ব্যথা অনুভূত হয়। গবেষকদের কথায়, এই দুই ধরনের ব্যথাই কমাতে পারে টার্গেটেড মাসল রিইননার্ভেশন। পাঁচ বছরের গবেষণায় এমনটাই ফলাফল পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।


আরও পড়ুন: High blood pressure: উচ্চ রক্তচাপ হার্টে কীভাবে ব্লকেজ তৈরি করে ? গোপন কায়দার খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা