কলকাতা: কাজের কারণে রাত জাগা হোক, বা রাত জেগে সিনেমা-সিরিজ দেখা। দীর্ঘক্ষণ রাত জেগে থাকার সময় অনেকেরই সঙ্গী হয় নানা মুখরোচক খাবার। কখনও কাজের চাপে খেতে দেরিও হয়ে যায় অনেকটা। রাতে দেরি করে যদি খাওয়া-দাওয়া হয় তাহলে শরীরে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে বাধ্য। এর উপর যদি কুকি, চকোলেট, নরম পানীয় বা ভাজাজাতীয় কোনও খাবার পাতে থাকে, তাহলে তার ক্ষতিকর প্রভাব আরও বেশি হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি হওয়া একটি গবেষণায়, আমেরিকার বস্টনের ব্রিগহাম এবং মহিলা হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে খাওয়ার সময় আমাদের বিপাক প্রক্রিয়া নানাভাবে শরীরের উপর প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গভীর রাতে খিদে পেলে হালকা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। রাত কর উচ্চ ক্যালোরি, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার খেলে নানাভাবে সমস্যা হয় শরীরে।
ওজন বৃদ্ধি:
রাতে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়ার গতি ধীর হয়ে যায়। খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমোলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একটি সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে যে দেরিতে খাবার খেলে, বিশেষ করে ঘুমের কাছাকাছি সময়ে খেলে ওজন বাড়তে পারে।
হজমে সমস্যা:
গভীর রাতে খাওয়ার ফলে পাচনতন্ত্রে নানা সমস্যা হতে পারে। অনুপযুক্ত খাদ্য হজমের ফলে পাকস্থলী থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যাসিড নিঃসৃত হতে পারে। যা আদতে শরীরের পক্ষে খারাপ।
মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব:
দেরি করে খাওয়া, খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমনোর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ নানা প্রক্রিয়ায় ধাক্কা লাগে। ঘুমের সমস্যা হয়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে, উদ্বেগ (Anxiety) এবং অবসাদের ঝুঁকি থাকতে পারে। জনস হপকিন্স মেডিসিনের একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, অনিদ্রার রোগীদের অবসাদের ঝুঁকি বহুগুণ বেশি হতে পারে।
হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ:
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সন্ধ্যা ৬টার পর উচ্চ-ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া। উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে পারে, যা টাইপ 2 ডায়াবেটিস হতে পারে।
রক্তে শর্করার মাত্রায় ঊর্ধ্বগতি:
খেয়েই সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। মধুমেহ রয়েছে, অথবা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের এই বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখা উচিত। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারও তালিকায় থেকে বাদ দেওয়া উচিত বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তার বদলে ফাইবার জাতীয় খাবারে বেশি ভরসা রাখা উচিত।
ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।
আরও পড়ুন: ফুসফুস ভাল রাখতে প্রয়োজন ব্যায়াম, নজর থাকুক প্রতিদিনের ডায়েটেও