কলকাতা: দূষণের কারণে হোক বা দীর্ঘদিনের ধূমপানের অভ্যাস। নানা কারণেই দেহের যে অঙ্গে ধাক্কা লাগে সেটি হল ফুসফুস (Lungs)। বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা কারণে ফুসফুসে নানারকম চাপ পড়ে। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হন অনেকে। তাই প্রথম থেকেই ফুসফুসের প্রতি যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তার জন্য বিভিন্ন ভাবে শ্বাসযন্ত্রের ব্যায়ামের (Exercise) পরামর্শ যেমন থাকে। তেমনই ধূমপানের বন্ধ করার পরামর্শও থাকে। পাশাপাশি, নজর থাকে ডায়েটেও। পুষ্টিকর খাদ্য দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। একইভাবে ফুসফুস ভাল রাখতেও ডায়েটে নজর দেওয়া প্রয়োজন।    

  
বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, বেশ কিছু ধরনের খাবার ফুসফুস ভাল রাখতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে ফুসফুস সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি, পালমোনারি রোগের ঝুঁকি কমতে পারে। ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার উপর জোর দিতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। কী কী খাওয়া যাবে?


পাতে কী কী থাকলে ভাল থাকবে ফুসফুস:


আপেল: আপেলের খোসায় কোয়ারসেটিন নামক একটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, যা ফুসফুসে প্রদাহ কমাতে এবং সিওপিডি-র (COPD) মতো ফুসফুসের রোগে সুরাহা দিতে সাহায্য করে। আপেল, কলার মতো ফল ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যাওয়া রুখতে সাহায্য করে। যাঁদের ধূমপানের অভ্যাস রয়েছে, তাঁদের জন্য এই খাবার অত্যন্ত উপকারী।


বেল পেপার: লাল রঙের বেল পেপার, কাঁচা লঙ্কায় উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি রয়েছে। পাশাপাশি এতে রয়েছে ভরপুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এটি ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং প্রদাহ কমায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল রাখতে ভিটামিন সি প্রয়োজন। ধূমপায়ীদের মধ্যে অ-ধূমপায়ীদের তুলনায় ভিটামিন সি-এর মাত্রা কম থাকে। ফলে তাঁদের পাতে এই আনাজ রাখা প্রয়োজন।


বিট: বিট (Beets) বা উজ্জ্বল রঙের আনাজ ডায়েটারি নাইট্রেটে (dietary nitrates) ভরপুর। যখন এগুলি খাওয়া হয়, তখন তা শরীরে এই নাইট্রেটগুলিকে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত করে, যা রক্তনালীগুলিকে শিথিল করতে সাহায্য করে। রক্তনালিতে অক্সিজেন প্রবাহ বৃদ্ধি পায়, রক্তচাপও কমায়। আর এগুলি সবই ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। বিটে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি (anti-inflammatory) বৈশিষ্ট্য রয়েছে।


সবুজ শাকপাতা: পালং, পুঁই বা এই ধরনের সবুজ শাক-সব্জিতে একাধিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে। ভিটামিন সি এবং ক্যারোটিনয়েড রয়েছে এখানে। এগুলি প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। ক্যারোটিনয়েড যৌগ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকে।


মটরশুঁটি: (peas), মটর এবং মসুর ডালের (lentils) মতো খাবারে উচ্চ মাত্রার ফাইবার রয়েছে, যা ফুসফুসের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ধূমপায়ী এবং অ-ধূমপায়ী উভয়েরই ফুসফুসের প্রতিরক্ষা করার জন্য ফাইবার প্রয়োজন। 


টোম্যাটো: টোম্যাটো (Tomato) এবং টোম্যাটো-ভিত্তিক পণ্য ভিটামিন সি এবং লাইসোপিনের উৎস। এতে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা শ্বাসনালির প্রদাহ রুখতে কার্যকরী। লাইসোপিন সিওপিডি (COPD) আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুরাহা দিতে সাহায্য করে।


বেরিজাতীয় ফল: বেরি বা আঙুরজাতীয় ফল অর্থাৎ ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং ব্ল্যাকবেরির (Blackberry) মতো ফল অ্যান্থোসায়ানিন (anthocyanins) সমৃদ্ধ। ফ্ল্যাভোনয়েড (flavonoid) গোত্রের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও থাকে। ফুসফুসে শ্লেষ্মার প্রভাব এবং প্রদাহজনিত সমস্যায় লাগাম দেওয়ার জন্য সাহায্য করে।


ডিসক্লেইমার: কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন: ফাইবার থেকে ভিটামিন, এই ফলে লুকিয়ে নানা গুণ