কলকাতা: মিষ্টি ভাল লাগে? প্রতিদিনই চিনিজাতীয় খাবার খান? অত্যধিক মিষ্টি খান? এদিকে বয়স বাড়ছে, চিন্তা বাড়ছে ডায়াবেটিসের। এই সময় একটা প্রশ্ন অনেকের মনেই থাকে। বেশি চিনি খেলে কি ডায়াবেটিস হয়?


যোগাযোগ রয়েছে?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বেশি চিনি খেলেই ডায়াবেটিস হবে এমন সরাসরি যোগাযোগ নেই। কিন্তু ডায়াবেটিস হতে পারে এমন সম্ভাবনা রয়েছে।  অর্থাৎ উত্তর একদিকে হ্যাঁ, আবার একদিকে উত্তর না। চিনি খেলে সরাসরি ডায়াবেটিস হয়তো হবে না। কিন্তু ওবেসিটি, অতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে টাইপ টু ডায়াবেটিসের একটা যোগাযোগ আছে।  অতিরিক্ত চিনি, চিনিজাতীয় খাবার ও পানীয় খেলে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে। একদিকে ওজন বাড়তে থাকলে ডায়াবেটিস থাবা বসাতে পারে তাড়াতাড়ি।


অন্য ঝুঁকিও রয়েছে:
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ওজন বৃদ্ধি ও ডায়াবেটিসের এই যে যোগাযোগ তা সবসময় দেখা যায় এমন না। নানা শর্তের উপর নির্ভর করে এই ঝুঁকি। অনেকসময় ওবেসিটি না থাকলেও থাবা বসাতে পারে ডায়াবেটিস। 


ডায়াবেটিস মূলত দুই প্রকারের হয় টাইপ ওয়ান এবং টাইপ টু। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ডায়েট বা লাইফস্টাইলের সঙ্গে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস জড়িত থাকে না। বরং জিনগত বিষয় এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি এর জন্য অনেকটা দায়ী হয়। যদি বাবা-মা বা ভাই-বোনের টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস থাকে তাহলে সেই ব্যক্তিরও টাইপ ওান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এই ধরনের ডায়াবেটিস রোখার জন্য কী ওষুধ কাজে লাগতে পারে, তার জন্য দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২২ সালের নভেম্বরে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন একটি ওষুধে ছাড় দিয়েছে যেটি টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস সারাতে ব্যবহার করা হবে। নির্দিষ্ট দিন ধরে নির্দিষ্ট পরিমাণে তা নিতে হবে।


উল্টোদিকে টাইপ টু ডায়াবেটিস অনেক বেশি জটিল একটি সমস্যা। এর একাধিক উপসর্গ রয়েছে। একাধিক ঝুঁকি রয়েছে। মূলত জীবনযাপনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে এই ধরনের ডায়াবেটিসের সমস্যা। ওবেসিটি, শরীরচর্চা না করা, অত্যধিক স্ট্রেস-এর কারণে থাবা বসায় এই ধরনের ডায়াবেটিস। 


আরও কারণ:
প্রি-ডায়াবেটিক হলে, এটি এমন অবস্থা যখন রক্তে শর্করার মাত্রা তুলনায় বেশি, আবার এতটাও বেশি নয় যাতে ডায়াবেটিক হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
৪৫ বছর তার বেশি বয়স হলে ঝুঁকি থেকে যায়।
পরিবারের কারও টাইপ টু ডায়াবেটিস থাকলে
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে ঝুঁকি থেকে যায়।


এড়ানো সম্ভব:
নিয়মিত শরীরচর্চা, স্ট্রেস কমানো, ডায়েটে নজর দেওয়া, নির্দিষ্ট রুটিন ফলো করা-এমন অভ্যাস করলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে বা দূরে রাখা যাবে ডায়াবেটিসকে।


উপসর্গ কী কী?
অতিরিক্ত জল তেষ্টা, বারবার মূত্রত্যাগ, খিদে বেড়ে যাওয়া, সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়া, বারবার সংক্রমণ, মূলত পেটের সংক্রমণ- ডায়াবেটিসের লক্ষ্মণ হতে পারে। এছাড়াও, অস্বাভাবিক হারে ওজন কমা, সহজে কাটা-ঘা না শুকনোর মতো উপসর্গও রয়েছে।


ডায়াবেটিস হলেই চিনি বাদ?
ডায়াবেটিসের মাত্রা কী? হাই ব্লাড সুগার নাকি লো ব্লাড সুগার তার উপর এর উত্তর নির্ভর করে। এক এক ব্যক্তির জন্য এক একরকম নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডায়াবেটিস হলে শরীরচর্চা করা, ঠিকমতো ডায়েট মেনে চললে সুস্থ থাকা সম্ভব।


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন: ছত্রাক সংক্রমণের থাবায় বিপুল সংখ্যক ভারতীয়, উদ্বেগ রয়েছে?