ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : কোভিড পরবর্তী জটিলতা ( Post Covid Complication ) কেড়ে নিয়েছে হাজার হাজার প্রাণ! আর এবার কোভিড এনসেফ্যালোপ্যাথির সমস্যা ( COVID-19 encephalopathy )ও মাল্টি অর্গান ফেলইয়রে ময়দান হারাল এক শিল্পী ফুটবলারকে। চলে গেলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত (Surajit Sengupta)। দীর্ঘ একমাস কোভিড-১৯ (COVID 019) এর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে  হার মানলেন ময়দানের হার-না-মানা  ছেলে। 


কোভিড পরবর্তী জটিলতা কেড়ে নিচ্ছে এক এক করে বহু সেলিব্রিটির প্রাণ।  বাদ যাননি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee )। তারপর লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) ,  গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের (Sandhya Mukherjee )  মতো কিংবদন্তী। এঁরা করোনা আক্রান্ত হলেও, পরে কোভিড নেগেটিভ হন। তাহলে কেন বাঁচানো গেল না তাঁদের? তাহলে কি কোভিড চলে গেলেও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে যাচ্ছে শরীরে? আর তার জেরেই কি কোমর্বিডিটি থাকা বয়স্কদের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে?    


চিকিত্‍সকরা বলছেন, কোমর্বিডিটির কারণে পোস্ট কোভিড জটিলতা কেড়ে নিল তাঁদের। প্রবীণ এবং যাদের কোমরবিডিটি আছে, তাই তাঁদের সতর্ক থাকতেই হবে।

আরও পড়ুন :


গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে কেন বাপির নাম? কোন হলিউডি ছবিতে ব্যবহার হয়েছিল তাঁর গান?


সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁর হৃদযন্ত্রের গোলযোগ দেখা যায়। চিকিত্‍সকরা জানিয়েছিলেন তাঁর হৃদযন্ত্রে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা রয়েছে। এই অবস্থায় করোনামুক্ত হলেও, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে বাড়ি ফেরানো যায়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, থার্ড ওয়েভে দেখা গিয়েছে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও হার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 


 কার্ডিওলজিস্ট  অতনু সাহা জানাচ্ছেন, কোভিড পরবর্তীতে বয়স্ক মানুষদের হার্ট বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রবীণরা করোনা আক্রান্ত হলে এবং হার্টের সমস্যার মতো কোমর্বিডিটি থাকলে তা হৃদযন্ত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। যা বাড়িয়ে দিতে পারে প্রাণের ঝুঁকি।


কার্ডিও থোরাসিক সার্জেন তাপস রায়চৌধুরীও জানাচ্ছেন, কোভিড পরবর্তীতে  রক্ত জমাট বাধার প্রবণতা বেড়ে যায়। প্রবীণদের ক্ষেত্রে বেশি হচ্ছে। তাই কোভিড থেকে সুস্থ হয়েও বিপদ কাটছেই না। 


শুধু হৃদযন্ত্রজনিত সমস্যা নয়। চিকিত্‍সকরা বলছেন, করোনা হলে অন্যান্য কোমর্বিডিটিও প্রবীণদের ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে। ৮৭ বছরের সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় করোনা সংক্রমণমুক্ত হলেও, দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। এমনকি তাঁর কিডনির সমস্যাও ছিল। অন্যদিকে ৯২ বছরের লতা মঙ্গেশকরের বার্ধক্যজনিত অসুবিধা তো ছিলই, সঙ্গে করোনার দোসর হয়েছিল নিউমোনিয়া।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স হলে এমনিই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কার্যক্ষমতা হারাতে শুরু করে। ওষুধপত্র দিয়ে সেগুলির ভারসাম্য রক্ষা করেন চিকিত্সকরা। কিন্তু কোভিড পরবর্তী জটিলতা সেই ভারসাম্যকেই নষ্ট করে দিচ্ছে। 


ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ রক্তিম গুহ জানালেন, কোমরবিডিটি থাকলে  নিয়মিত পরীক্ষার মধ্যে থাকা দরকার। এই অবস্থায় প্রবীণদের ক্ষেত্রে করোনা হলে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্‍সকরা।