কলকাতা: মনের সঙ্গে হার্টের অসুখের যোগ কতটা ? চিকিৎসকদের মতে, হার্ট ভাল রাখতে গেলে মানসিক ভাবে ভাল থাকা জরুরি। স্ট্রেস বর্তমান জীবনযাত্রার অঙ্গ। একেবারে স্ট্রেস বর্জিত জীবন তো অলীক কল্পনা ! কিন্তু তা যেন বাড়াবাড়ির পর্যায়ে না যায়, তা খেয়াল রাখতেই হবে।
- কাজের জগত নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন?
- চাকরি টিকবে কি টিকবে না, এই নিয়ে সদা আতঙ্কে ?
- অন্যের সঙ্গে তুলনায় আরও বেশি মন খারাপ ?
- বসকে কিছুতেই খুশি করতে পারছেন না ?
- কাজ করেও ভাবছেন, ঠিকঠাক হল কি না ?
- কর্মক্ষেত্রে নানারকম বাধা কি আপনাকে সবসময় ভাবাচ্ছে ?
এই চিন্তাগুলি যদি আপনার মনে জাঁকিয়ে বসে, তাহলে স্ট্রেস আপনার মনে চেপে বসতে বাধ্য ! আর তা থেকে স্ট্রেসের চোরা স্রোত সরাসরি প্রভাব বিস্তার করবে হৃদপিণ্ডের উপর। হার্টের অসুস্থতার পিছনে নানা কারণের মধ্যে অন্যতম মেন্টাল স্ট্রেস , বলছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুজিত সরখেল। যাঁরা ইতিমধ্যেই হার্টের অসুখে ভুগছেন, তাঁদের পক্ষে স্ট্রেস মারাত্মক। হার্ট অ্যাটাকের পর সেরে উঠতে দীর্ঘ সময় ওষুধপত্র ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার মধ্যে থাকতে হয়। কিন্তু কারও যদি জীবনের অঙ্গ হয়ে যায় অতিরিক্ত স্ট্রেস, তাদের জন্য হার্টের অসুখ থেকে সেরে ওঠাও কঠিন হয় । বলছেন চিকিৎসক।
ডিপ্রেশন ও হার্ট অ্যাটাক
- কারও যদি ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের ট্রিটমেন্ট চলে, তাহলে কিন্তু তা হার্ট অ্যাটাকের অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
- ডিপ্রেশন কিন্তু সাইলেন্ট কিলার। ঠিক সময়ে ট্রিটমেন্ট না হলে হৃদযন্ত্রের জন্য খুবই ক্ষতিকারক ।
ঘুম ও হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য
- মনের স্বাস্থ্য বা হার্টের স্বাস্থ্য সবকিছুর জন্যই টানা ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম মাস্ট ।
- রাতের দিকে কাজ বেশি থাকলে বা বাড়ি ফিরতে দেরি হলেও, রাতে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমোতেই হবে।
- একান্তই যদি টানা ঘুম সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত ছোট্ট ঘুম বা ন্যাপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
- মেনে চলতে হবে স্লিপ হাইজিন।
- ঘুমনোর সময়ের আগে উত্তেজক পানীয় খেলে চলবে না।
- চেষ্টা করলেও ঘুম আসছে না ? বা ঘুম থেকে উঠেও ক্লান্ত কাটছে না ? তাহলে সতর্ক হোন
- কোনও কিছুতেই ভাল থাকতে পারছেন না ? সবসময়ই মন খারাপ? তাহলেও সতর্ক হতে হবে ।
স্ট্রেস তো বর্তমান জীবনযাত্রার অঙ্গ, এটা বাদ দিয়ে চলা বর্তমান জীবনযাত্রায় কোনওমতেই সম্ভব নয় ! কিন্তু কাজের প্রেসারের বাইরেও, আমরা যদি ক্রমাগত নিজের অবস্থার সঙ্গে অন্য কারও তুলনা করি, প্রতিযোগিতা চালাই মনে মনে, তাহলে স্ট্রেস বৃদ্ধি হয়। এভাবে স্ট্রেস আমন্ত্রণ করা বাদ দিতে হবে। তাহলে তা শরীরের সার্বিক ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে বাঁচানো যাবে। বললেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কুণাল সরকার।