নয়াদিল্লি : দু’টি টিকা কতদিন কাজ করবে? টিকার ডাবল নেওয়ার পরেও অনেকেই করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই  কেসগুলিই চিন্তা বাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের। তাহলে কি টিকা নেওয়ার পর তাদের কোভিড বিধি মানায় গা-ফিলতি বাড়ছে?  নাকি বুস্টার টিকা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়ছে? এ নিয়ে বিস্তর সংশয় সৃষ্টি হয়েছে সকলের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে আরও ইমিউনিটি বাড়াতেই বুস্টার টিকা নেওয়া প্রয়োজনীয় কি না। কারণ কিছুদিন আগে বুস্টার ডোজ নিয়ে একটি নির্দেশ জারি করে হু। কাদের বুস্টার ডোজ নেওয়া আবশ্যক ? কাদের নিতে হবে না ? এই নিয়ে গত অক্টোবরেই নতুন পরামর্শ দেয় হু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি ছিল, যাঁদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম, তাঁদের বুস্টার ডোজ নেওয়া আবশ্যক। যাদের শরীরে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ততদিন টিকার কার্যকারিতা স্থায়ী হয়। WHO এক প্রেস বিবৃতিতে জানায়, যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদের কোভিডের ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ জরুরি। 


এছাড়াও কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, যখন এটি ভ্যাকসিনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পেতে পারে। এটাই স্বাভাবিক। তবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কার কতটা তার উপর অনেকটাই নির্ভর করছে সেই ব্যক্তির ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না।  ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় শটের পর  মোটের উপর ছয় মাস মতো স্থায়ী হয় এর ক্ষমতা। সেই সময়সীমার পরে, টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের অ্যান্টিবডি মাত্রা কমতে শুরু করতে পারে।  তখন, তার বুস্টার ডোজ প্রয়োজন কি না, তা আপনার শরীরের অ্যান্টিবডিরকাউন্টই স্থির করবে বলেই চিকিৎসকদের মত। কিন্তু সুরক্ষা কমে গেলেও, এর মানে এই নয় যে আপনার শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।


কিন্তু এই নিয়ে দ্বিধার অবসান হয়নি। হালে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR)-এর প্রধান চিকিৎসক বলরাম ভার্গব বলেন, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বা  কোভিড সংক্রমণ আটকাতে বুস্টার টিকার কোনও দরকার আছে বলে কোনও বৈজ্ঞানিক তথ্য নেই। এই টিকা নিতেই হবে এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলেই বলেন ভার্গব।  তাঁর মতে, আগে প্রয়োজন সবার দ্বিতীয় টিকা সম্পূর্ণ করা। আর ভারতের মতো বড় দেশে সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ।  তারপর বুস্টার টিকা যে নিতেই হবে এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। 

আরও পড়ুন :


রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের পরও বুস্টার নিতে হবে, পরামর্শ হু-র




ভারতে ইতিমধ্যেই ১১৭ কোটি টিকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বুস্টার টিকা দেওয়া শুরু হবে কি না তা নিয়ে এ মাসেই আলোচনা হতে পারে কেন্দ্রীয় কমিটির।  




এর মধ্যেই কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছে ভারতের করোনাগ্রাফ। করোনায় দেশে কমল দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।    কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৫৭৯ জন।  যা গত দেড়বছরে সর্বনিম্ন। গতকাল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৪৮৮।  গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে  ২৩৬ জনের।  গতকাল দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৪৯।  দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ১৪৭ জনের।  মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৮০।