পায়েল মজুমদার, কলকাতা: হঠাৎ হঠাৎ চোখ (eyes reddened) লাল হয়ে যায়? জল দিলে জ্বালাপোড়ার (Burning Sensation) অনুভূতি হতে থাকে? বা থেকে থেকেই চোখে কিছু পড়েছে বলে মনে হয়? তা হলে সজাগ হোন। হতে পারে আপনি 'ড্রাই আইসের' (dry eyes) শিকার। চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞদের (Eye Specialist) মতে, এই অসুস্থতা নিয়ে এখন তাঁদের কাছে আকছার রোগী আসছেন। দিশা আই হসপিটালের চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ, অনন্যা গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায় তাঁর কাছে ৮০ শতাংশ রোগীই এখন 'ড্রাই আইসের' সমস্যা নিয়ে আসেন। এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে এই সমস্যা আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে পূর্বাভাস চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞদের।
ড্রাই আইস কী?
চোখের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি লুব্রিক্যান্ট। কিন্তু যখন অশ্রুগ্রন্থি পর্যাপ্ত সেই 'লুব্রিকেশন' দিতে পারে না বা কোনও কারণে চোখের সেই লুব্রিকেশনের পরিমাণ যথেষ্ট হয় না, তখনই 'ড্রাই আইস' -র মতো সমস্যা দেখা যায়।
উপসর্গ:
- চোখে কচকচানি/জ্বালাপোড়া ভাব
- চোখের আশপাশে আঁঠালো পিঁচুটি
- ঊজ্জ্বল আলোয় অসুবিধা
- চোখের লালচে ভাব
- কটকটে ভাব
- কনট্যাক্ট লেন্স পরায় অসুবিধা
- রাতে ড্রাইভিংয়ে অসুবিধা
- ঝাপসা দৃষ্টি
কারণ?
দিশা আই হসপিটালের কনসালট্যান্ট পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড কমপ্রিহেনসিভ অফথ্যালমোলজিস্ট, চিকিৎসক অনন্যা গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, 'এর নেপথ্যে বেশ কিছু শারীরবৃত্তীয় বা ফিজিওলকিজ্যাল কারণ থাকে। এক, কিছু ক্ষেত্রে চোখের জলই কম তৈরি হয়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, চোখে জল তৈরি হলেও তা উবে যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা এই দুটি কারণের সম্মিলিত জের দেখতে পাই। ' তবে একই সঙ্গে আরও কিছু কারণের কথাও জানালেন তিনি। ড্রাই আইসের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হতে পারে স্ক্রিন টাইম। চিকিৎসক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, 'আমরা অনেকক্ষণ ধরে কোনও একটি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের পাতা ফেলার হার অনেকটা কমে যায়। সেটি কিন্তু চোখের জল উবে যাওয়ার অন্যতম বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তা ছাড়াও পরিবেশগত কারণও একটি ফ্যাক্টর।' স্মোকিং, মেনোপজের পর হরমোনের মাত্রায় তারতম্য, এবং যে কোনও ধরনের অটোইমিউন ডিজিজিও ড্রাই আইস তৈরি করতে পারে। ডায়াবিটিস, থাইরয়েস-সংক্রান্ত সমস্যাও এর মধ্যে পড়ে।
চিকিৎসা আছে কি?
ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, এই অসুস্থতা পুরোপুরি সারার না হলেও অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে। তবে কী ভাবে চিকিৎসা পদ্ধতি এগোবে, সেটি রোগী এবং ডাক্তার মিলে সিদ্ধান্ত নেন। চিকিৎসক গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, 'ধরুন কারও ৮ ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম, সেক্ষেত্রে তাঁকে যতটা সম্ভব স্ক্রিন টাইম কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। বিনোদনমূলক জিনিসপত্র যত কম দেখা যায়, দূর থেকে স্ক্রিন দেখা, কম্পিউটার ব্যবহারের সময় অ্যান্টি-গ্লেয়ার ব্যবহার ইত্যাদি বিষয় মেনে চলতে বলা হয়ে থাকে।' এছাড়াও নির্দিষ্ট টিয়ার ড্রপ ব্যবহারেরও পরামর্শ দেওয়ার কথা বলেন ডাক্তাররা। তবে আখেরে কে কতটা সেই পরামর্শ মেনে চলছেন, তার উপর অনেকটাই নির্ভর করে চোখের ভালো থাকা। সুস্থ থাকা।
আরও পড়ুন:ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে পাকড়াও বিজেপি বিধায়কের আমলা-পুত্র ! বাড়ি থেকে উদ্ধার ৬ কোটি টাকা