কলকাতা: ঘরের জানলা হোক বা মেট্রোর সিট, যে কোনও জায়গায়, যে কোনও সময়ে ইয়ারফোন বা হেডফোন ছাড়া থাকা কঠিন? তা হলে অবিলম্বে সতর্ক হোন। কারণ হালের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, ইয়ারফোন বা হেডফোনের অতি ব্যবহার শিশু-সহ বহু মানুষের মধ্যে শ্রবণ এবং বাকশক্তি সংক্রান্ত রোগের হার বাড়িয়ে দিচ্ছে। গবেষণাটি করেছিল 'Indian Speech and Hearing Association'-এর দিল্লি শাখা।
গবেষণা নিয়ে...
'কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার' নিয়ে এই গবেষণার জন্য দিল্লি এনসিআর এবং জম্মু ও কাশ্মীরে কার্যত দোরে দোরে ঘুরে তথ্য় জোগাড় করা হয়। সেই গবেষণা প্রসঙ্গেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রাক্তন উপদেষ্টা, রাজেন্দ্র প্রতাপ গুপ্তা সোমবার বলেন, 'কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডারের ঘটনা ৩ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু এই রোগ নিয়ে আমজনতার সচেতনতা এখন অনেক কম, ১১ শতাংশের কাছাকাছি।' এর পর সমস্যার বিশদ বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, '১৯-২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে শ্রবণশক্তি ধাক্কা খাওয়ার হার বেড়েছে ৪১.২ শতাংশ। ২৬-৬০ বছর বয়সীদের মধ্যে ওই হার বেড়েছে ৬৯.৪ শতাংশ।' এই পরিসংখ্যান যে অত্যন্ত চিন্তার সে কথা মনে করিয়ে রাজেন্দ্র প্রতাপ গুপ্তার আরও দাবি, 'ইয়ারফোন বা হেডফোন ব্যবহার করা নিয়ে মোবাইল প্রজন্মের সতর্ক হওয়ার এটাই সময়। না হলে হেডফোনের পরিবর্তে অচিরেই হিয়ারিং এড ব্যবহার করতে হবে।'
গত মে-জুন মাসে গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়। দিল্লি-এনসিআর এলাকার ১০ হাজার ২২৮টি পরিবারের ৫৩ হাজার ৮০১ জনের তথ্য নেওয়া হয়েছিল। অন্য দিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের ১ হাজার ২৫৭টি পরিবারের ৬ হাজার জন গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন। আলাদা করে দেখা গিয়েছে, দিল্লি-এনসিআর এলাকায় 'কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার' -এর হার ৩.০৫ শতাংশ। কাশ্মীরে ওই হার ৬.১৭ শতাংশ, জম্মুতে ২.৪ শতাংশ।
আর কী?
পরিসংখ্যান আরও দেখাচ্ছে, দিল্লি এনসিআর এলাকায় speech sound disorders (SSD) সবচেয়ে বেশি ৬-১২ বছর বয়সীদের মধ্যে। ৪২.৪ শতাংশ শিশুই speech sound disorders-এ ভোগে, উঠে এসেছে সমীক্ষায়। এর পরেই রয়েছে ১৩-১৮ বছর বয়সীরা। তাদের ক্ষেত্রে এই রোগের হার ৩১.১ শতাংশ। fluency disorders-ও সবচেয়ে বেশি ৬-১২ বছরের শিশুদের। অন্য দিকে, পাঁচ বছর পর্যন্ত যাদের বয়স, তাদের মধ্যে language disorders-এ সবচেয়ে বেশি সমস্যা বলে উঠে এসেছে এই গবেষণায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করাচ্ছেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার হুড়মুড়িয়ে বাড়ানোর কিছু ভয়ঙ্কর কুফল রয়েছে। তাই সতর্ক ও সচেতন হয়ে এই যন্ত্র-প্রযুক্তি ব্যবহার জরুরি। না হলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না।
আরও পড়ুন:পড়ুয়ামৃত্যুতে রাজ্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে শোকজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের