হিটস্ট্রোকের আতঙ্ক বাড়ছে। চিকিৎসকরা বলছেন এই গরমে সবথেকে বেশি সমস্যা শিশুদের আর বৃদ্ধদের। এছাড়াও স্পর্শকাতর কয়েকটি রোগে আক্রান্ত মানুষরা। তাঁদের জন্য একাধিক সতর্কবার্তা দিচ্ছে চিকিৎসকরা। এবিপি আনন্দ কথা বলেছিল শহরের বিভিন্ন বিশিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ বারবার  সাবধান করলেন অভিভাবকদের। 


ডা. অপূর্ব ঘোষ জানালেন, এই সময় বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ রাখাটাই শ্রেয়। যেহেতু স্কুলগুলি পরে একটু আবহাওয়া ভাল হলে সিলেবাস শেষ করতে পারে, তাই স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। বাচ্চাদের মেটাবলিক রেট বেশি, অতিরিক্ত তাপ লেগে গেলে, তা আরও বেড়ে গিয়ে বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক। ডা. ঘোষের মতে, এই সময় বাচ্চাদের দুইবার করে স্নান করানো আবশ্যক। যতটা সম্ভব ঠান্ডায় রাখতে হবে। হালকা ধরনের খাবার দিতে পারলেই ভাল। প্রাধান্য দিতে হবে ফল, মূল, দুধ ইত্যাদি। ছাতা ব্যবহার করতে হবে। চিকিৎসক জানালেন, রাস্তায় কাউকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখলে তাঁকে আগে ছায়ায় নিয়ে যেতে হবে। তাঁর শরীর জল দিয়ে ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করতে হবে। মাথায় জল ঢালতে হবে। তাতেই অনেকটা সুরাহা হতে পারে। এর পরেও অসুস্থতা না কাটলে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যেতেই হবে। এর থেকে রেহাই নেই।                   


শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জয়দেব রায়ের পরামর্শ, বাচ্চাদের এই সময় খুবই জ্বর হচ্ছে। তা কিন্তু ভাইরাল ফিভার নয়। একেবারেই অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্যই এই জ্বর হচ্ছে। এক্ষেত্রে জিভ, ঠোঁঠ , শুকিয়ে যায়। মাসল ক্রাম্পও হতে পারে। অতিরিক্ত তাপ লেগে ডাইরিয়ার মতো উপসর্গও হতে পারে। বাচ্চাদের এই তাপজনিত অসুস্থতা এড়াতে খাওয়াতে হবে তরল জাতীয় জিনিস। তাবলে শিশুদের কোল্ড ড্রিঙ্ক খাওয়ানোর বিরুদ্ধে ডা. রায়। এমনকী খেতে বারণ করছেন গ্লুকোজও। আর রাস্তার লাল-নীল শরবতও খাওয়ানো ঠিক নয় বলে মনে করছেন ডাক্তারবাবু। বরং খাওয়ানো দরকার নুন চিনির জল। এছাড়া খাওয়া যেতে পারে ওআরএসও। এছাড়া কাটাফলও খাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে বদলে খেতে হবে গোটা ফল। 


বড়দের জন্য পরামর্শ দিলেন ডা. নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, এবারের গরমটা বেশ শুষ্ক, অনেকটা উত্তর ও পশ্চিমভারতের মতো। ঘাম হচ্ছে না, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। এরকম গরমে শরীর খুব তাড়াতাড়ি ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। তাই রাস্তায় বেরোতে গেলে আগে নিজের শরীরটাকে প্রস্তুত রাখতে হবে। হিট ক্র্যাম্প হলেই সচেতন হতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে ছায়ায় যেতে হবে। হাঁটতে থাকলে কিন্তু বিপদ। এরপর বমিভাব, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ হতে পারে। এর থেকেই হিট স্ট্রোক হতে পারে। তখন তাঁর শরীর ঠান্ডা করাটাই জরুরি। 


আরও পড়ুন :


'একটিও ছাপ্পা ভোট নয়, মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে দিন' তাপস রায়কে পাশে বসিয়ে বললেন কুণাল ঘোষ