নয়াদিল্লি: কোভিডের প্রকোপের সময় সুস্থ থাকতে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন অনেকে। তারই মধ্যে একটি হল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। বিশেষ করে কোভিডের প্রথম, দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই কাজের চল বেড়েছিল ভারতীয়দের মধ্যে। তার জন্য প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ও খাবার। ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট এবং জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেছেন অনেকে। কিন্তু..


কী তথ্যের ভিত্তিতে এই কাজ?
বিষয়টি বুঝতে একটি অনলাইন সমীক্ষা করেছিল ICMR-এর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশন।  সেখানে দেখা গিয়েছে যাঁরা সমীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশ সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্যের উপর নির্ভর করে, তা বাছবিচার না করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। তবে যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন বা পরিবারের কেউ আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরা চিকিৎসকদের কথা মেনেই পদক্ষেপ করেছেন।


কোন প্রতিবেদন:
শীঘ্রই এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হবে। প্রতিবেদনের নাম 'Impact of COVID-19 Infodemic on the food and nutrition-related perception, practices and reliability on the source of information among Indian internet users'। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশনের ডিরেক্টর ড. হেমলতা আর (Dr. Hemlata R) বলেছেন, 'স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য ঠিকমতো জানানো এবং ব্যবহারের জন্য মিডিয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং স্বাস্থ্য সাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তা কথা এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।' কোভিড সম্পর্কে অসমর্থিত, ভুল খবর পরিবেশন করা হয়েছে। যার জেরে প্রচুর লোক ভয় পেয়েছেন, ভুল তথ্য জেনেছেন। ভারতে সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্য়বহারকারী থাকায়, নেট মাধ্য়মে কোভিড সম্পর্কিত প্রশ্ন করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে এই ধরনের তথ্য দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে যেমন ভয় ছড়িয়েছে তেমনই অবৈজ্ঞানিক পন্থারও অবলম্বন করেছেন অনেকে। এমনটাই মত প্রধান গবেষক ড. সুব্বারাও এম গাভারাভারাপুর। দেশে প্রথম যেদিন কোভিড ধথরা পড়েছিল এবং যখন দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হয়েছিল, সেই সময়কাল ২৭ জানুয়ারি, 2020 থেকে ৩০ জুন, ২০২১ পর্যন্ত  ভারতের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা কোভিড সম্পর্কিত প্রশ্ন, খাদ্য এবং পুষ্টির জন্য় যা যা তথ্য খুঁজেছেন এবং তার ভিত্তিতে কাজ করেছেন, এই গোটা বিশয়টি নিয়েই অনুসন্ধান চলেছে বলে জানিয়েছেন সুব্বারাও।


গুগল ট্রেন্ড (Google Trends)-এর মাধ্যমে ৩৪টি প্রথম সারির সার্চ কী-ওয়ার্ড (Search Keyword)-ks পাঁচটি আলাদা বিভাগে ভাগ করেছেন গবেষকরা। সেগুলি হল,'ইমিউনিটি', 'খাদ্য আচরণ', 'খাদ্য নিরাপত্তা', 'খাদ্য ভয় এবং উদ্বেগ' এবং 'কোভিড ভীতি' —প্রথম ঢেউয়ের এগুলির সার্চ ট্রেন্ডিং ঊর্ধ্বগামী ছিল। তারপরে ফের দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতেই একই সার্ড ট্রেন্ডিং দেখা গিয়েছে। এরই সঙ্গে বিভিন্ন ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট (Vitamin Supplement), প্রতিরোধশক্তি বাড়ানোর উপায় (Immunity booster) নিয়ে খোঁজ চলেছে। কোভিড রুখতে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার খোঁজ করেছেন অধিকাংশ লোক। 
সমীক্ষায় ৭১.৯ শতাংশ উত্তরদাতারা জানিয়েছেন, ওই সময়ে ভিটামিন সি (Vitamin C)-সমৃদ্ধ খাবার যেমন লেবু, আমলকি, পেয়ারার মতো ফল খাওয়া বেড়েছিল। উত্তরদাতাদের একটি বড় অংশ অনাক্রম্যতা বাড়াতে ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট, জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট খেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আদা-রসুনের মতো দ্রব্যের ব্যবহারও বেড়েছিল। কোনও কোনও ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথের উপরও ভরসা করেছেন অনেকে।  


কীভাবে হয়েছে সমীক্ষা?
একটি closed ended questionnaire-এর মাধ্যমে সমীক্ষাটি করা হয়েছে। গোটাটাই অনলাইনে হয়েছে। মিডিয়া রিলিজ, প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সমীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। ওয়েবসাইটে সমীক্ষার প্রশ্ন ছিল এবং সোশ্যাল মিডিয়া লিঙ্ক শেয়ার করা হয়েছিল। কোভিডের সময় খাদ্যাভাস কীরকম ছিল, কোন জায়গা থেকে বা কাদের থেকে তাঁরা কোভিড সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করেছেন, কোন তথ্যের উপর ভরসা করেছেন সবই জিজ্ঞেস করা হয়েছে সমীক্ষায়। 


আরও পড়ুন: হার্ট ভাল রাখতে কী প্রয়োজন? বললেন গবেষকরা