কলকাতা:  মানুষের শরীরে জোড়া হল শূকরের কিডনি। আর সফলভাবেই সম্ভব হল সেই প্রতিস্থাপন। এই প্রতিস্থাপনকে ঘিরেই আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন গবেষকরা। প্রাণীর অঙ্গ মানুষের দেহে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা বহুদিন ধরেই চলছে। কিছু ক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে আসেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক অস্ত্রোপচারের ঘটনা সকলকেই চমকে দিয়েছে। বিশ্বে সর্বপ্রথম এই প্রক্রিয়ায় সফল অস্ত্রোপচার করা হল। ১৬ মার্চ অস্ত্রোপচার করার পর এখনও পর্যন্ত সুস্থ রয়েছেন রোগী। কোনওরকম জটিলতা দেখা দেয়নি।এর ভিত্তিতেই নতুন করে অঙ্গ প্রতিস্থাপন নিয়ে গবেষণা শুরু করা যেতে পারে বলে মত বিজ্ঞানীদের।


প্রাণীর অঙ্গ মানুষের দেহে !


প্রক্রিয়াটিকে জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন বলা হয়। এই বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রথমবারের সফল চেষ্টায় ৬২ বছর বয়সী ব্যক্তির দেহে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (Kidney Transplant) করা হয়। চিকিৎসক সূত্রের খবর, ১৬ মার্চের অস্ত্রোপচারের পর থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন ওই ব্যক্তি। কিডনির কাজও স্বাভাবিক বলেই খবর। তবে এই অস্ত্রোপচার করার সময় দুটি দিক মাথায় রেখেছেন চিকিৎসকরা। এমন শূকর বেছে নেওয়া হয়েছে, যার জিনের কারিকুরি ৬৯ জিনোমিক এডিট। এর কী সুবিধা, তাও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এই ধরনের শূকরের অঙ্গ থেকে রোগীর অঙ্গে সংক্রমণের কোনও ভয় থাকে না। এছাড়াও, অনেক সময় অঙ্গ প্রতিস্থাপন করলেও শরীর অঙ্গটিকে মেনে নেয় না। ফলে ঠিকমতো কাজ করে না প্রতিস্থাপিত অঙ্গটি। কিন্তু ৬৯ জিনোমিক এডিটের শূকরের অঙ্গ মানুষের দেহ প্রত্যাখ্যান করে না। ফলে ট্রান্সপ্লান্টের প্রক্রিয়ায় ফেল হওয়ার আশঙ্কা নেই।


কী বলছেন গবেষকরা


নেচার পত্রিকাকে চিনের কিউহান বায়োটেকের গবেষক লুহান ইয়াং বলেন, আপাতত অল্প সময়ের ফলাফল দেখে এটুকু বলা যায়, শূকরের এই অঙ্গ পুরোপুরি নিরাপদ ও কিডনির মতোই কাজ করছে। প্রসঙ্গত, লুহান ইয়াং জিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইজেনেসিস শূকর তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। 


শুরু হয়েছে জোর চর্চা


ইতিমধ্যেই তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে আগামী গবেষণার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এই ব্যাপারে প্রাথমিক ছাড়পত্রের আবেদন করা হয়েছে। কিডনির পাশাপাশি লিভার ও হার্টের ক্ষেত্রেও এমন ট্রান্সপ্লান্ট করা যায় কি না তা নিয়ে গবেষণা শুরুর আবেদন  করা হয়েছে। এবার ছাড়পত্র মেলার অপেক্ষা।


আরও পড়ুন - World TB Day 2024: টিবি হতে পারে শিশুদেরও, কী লক্ষণ, কী করণীয় ?