কলকাতা: ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগের রমরমা এখন। গায়ে ব্যথা, পেটে ব্যথা, মাথা ব্যথা হলেই অনেকে ঝটপট ওষুধ খেয়ে নেন। আর সেই ওষুধও নিমেষে ব্যথা কমিয়ে দেয়। কিন্তু এই সব ওষুধই কিডনির ক্ষতি করে। কারণ কিডনির মধ্যে রক্ত পরিশ্রুত হয়ে বর্জ্য পদার্থ বাইরে বেরিয়ে যায়। সেই বর্জ্য পদার্থ পরিশ্রুত করার সময়ই বিপদ ঘটে যায়। 


ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগে কী ক্ষতি ?


চিকিৎসকদের কথায়, কিডনির সমস্যায় ভারতের অনেকেই অসুস্থ। সারা দেশে মৃত্যুর কারণ হিসেবে অষ্টম স্থানে রয়েছে কিডনির রোগ। কিডনির রোগের পিছনে বেশ কিছু কারণ থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হল ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগ বেশি পরিমাণে খাওয়া। ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগের তালিকায় রয়েছে আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন ও কিছু অ্যান্টিবায়োটিক। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজনের মতোই এই ওষুধগুলিও কিডনির জন্য বিপজ্জনক।


কেন ওষুধগুলি বিপজ্জনক ?


কিডনির মধ্যে রক্তচাপ খুব গুরুত্বপূর্ণ। রক্তচাপ কিডনির মধ্যে পরিশ্রুত করার কাজ করে। ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগ সেই চাপ কমিয়ে দেয়। এর ফলে কিডনিতে জল জমতে থাকে। একই সঙ্গে কিডনির ইলেকট্রোলাইট নিয়ন্ত্রণেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। 


কী বলছেন চিকিৎসক ?


কলকাতার নারায়ণা হেলথ আর এন টেগোর হাসপাতালের নেফ্রোলজিস্ট দীপক শঙ্কর রায় সংবাদমাধ্যম আইএএনএস-কে জানান, নন স্টেরয়েডাল অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ড্রাগ কিছু নির্দিষ্ট উৎসেচককে নিস্ক্রিয় করে দেয়। এই উৎসেচকগুলিই কিডনির মধ্যে রক্ত চলাচলকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। অনেকেই মুড়িমুড়কির মতো প্যারাসিটামল খান। এতে কিডনি কাজের ক্ষতি হয়। এমনকি দুর্বল হয়ে পড়ে সেই অঙ্গ। কিন্তু খুব সহজে সেই লক্ষণ ধরা পড়ে না। তাই কিডনির সমস্যাকে নিঃশব্দ রোগ বা সাইলেন্ট ডিজিজ বলা হয়।


শ্রী বালাজি অ্যাকশন মেডিকাল ইনস্টিটিউটের প্রবীণ চিকিৎসক রাজেশ আগরওয়াল সংবাদমাধ্য়মকে বলেন, নিয়মিত এই ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। প্যারাসিটামল জাতীয় ছাড়াও বিভিন্ন রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের উপর ভরসা রাখতে হয়। আর তাতেই লুকিয়ে থাকে রেনাল ফেলিওর জাতীয় রোগের সূত্র। সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না করালে রোগ আরও গেঁড়ে বসে। যা কিডনি নষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিডনির সমস্যা ঠেকাতে হলে নিজের থেকে ডাক্তারি বন্ধ করা জরুরি বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসক। এছাড়াও, শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


আরও পড়ুন - Health Tips: ছোটদের মধ্যেও এখন ঘন ঘন কিডনির সমস্যা, কেন ?