Worldwide Pressure Injury Prevention Day : অনেক সময়ই বড় কোনও রোগ বা অস্ত্রোপচার মানুষকে বিছানায় ফেলে দেয় দীর্ঘ সময়ের জন্য। অনেক সময় তার মেয়াদ হয় কয়েক ঘণ্টা কিংবা দীর্ঘদিন । যাঁদের দিন কাটে বিছানাতেই, তাঁদের শরীর বিছানার চাপে থাকার জন্য শরীরের বিভিন্ন প্রেসার পয়েন্টে বেড সোর বা প্রেসার আলসারের মতো ক্ষত বা ঘা দেখা যায়। যেগুলিতে একই ছাতার তলায় এনে বলা হয় প্রেসার ইনজুরি । এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় ডাঃ শঙ্করপ্রসাদ সিংহ ( সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন , পিয়ারলেস হসপিটেক্স হসপিটাল )
এই প্রেসার ইনজুরি প্রাথমিক ভাবে চামড়ার ক্ষত থেকে শুরু হলেও, অবহেলায় তা হাড় অবধি ছড়িয়ে যায়। নষ্ট করে দেয় সেই অংশের স্নায়ুর কাজ। শেষ পর্যন্ত সেপসিসের মতো ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে এই ঘা। bedsore, pressure ulcer, pressure sore, or decubitus ulcer এগুলিকে একত্রে pressure injury বলা হয়ে থাকে।
এই আঘাতগুলি সাধারণত শরীরের হাড়ের জোড়ের অংশে বেশি দেখা যায়।
- নিতম্ব
- গোড়ালি
- টেইলবোন বা লেজের হাড়
- কনুই
- মাথায় দেখা যায়।
এছাড়া কোমর, পিঠের যেসব জায়গা, দীর্ঘক্ষণ বিছানার চাপে থেকে থেকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রথমে চামড়ার ওপরের তলে এই অসুখের উপসর্গ দেখা যায়। সেটাই এই অসুখের প্রাথমিক লক্ষণ।
পর্যায় ১: এই পর্যায়ে ত্বকের রং পরিবর্তন হয়। প্রথমে ত্বকের ওই অংশের রং গাঢ় লাল হয়ে যায়। আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ত্বক ব্লাঞ্চ হয় না, অর্থাৎ ত্বকের ওই রং ফ্যাকাসে হয় না। তখনই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ আবশ্যক। আর দরকার হাসপাতালের PI টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা। - পর্যায় ২: এই পর্যায়ে ত্বকের উপরিভাগের ক্ষতি হয়ে যায়। ত্বকের উপরের স্তর নষ্ট হয়ে যায়। এটি একটি ফোস্কার মত দেখতেও হতে পারে। এই পর্যায়েও হাসপাতালের PI টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
- পর্যায় ৩: এই পর্যায়ে ক্ষত আরও গভীরে চলে যায়। ক্ষতটি উপরিভাগ খুলে যায়। ত্বকের ভিতরের স্তর পর্যন্ত প্রসারিত হয়ে যায় ক্ষত। যদিও পেশী এবং হাড় দেখা যায় না। কিন্তু এই পর্যায়ে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ার ভয় থাকে।
- পর্যায় ৪: এই পর্যায়টি সবচেয়ে গুরুতর। ক্ষতটি হাড় পর্যন্ত প্রসারিত হয়। পেশী এবং হাড় সংক্রমণের ফলে সেপসিস পর্যন্ত হতে পারে। একে প্রাণ হানিও ঘটতে পারে।
কেন হয় প্রেসার ইনজুরি - দীর্ঘ সময়ের জন্য একই অবস্থানে থাকার ফলে ত্বকে অবিরাম চাপ পড়ে। চামড়া চাদরের সাথে লেগে থাকে, তাতে ত্বকে ক্রমাগত ঘষা লাগে। সেই সঙ্গে ওই স্থানের রক্তবাহিকাগুলির উপর অতিরিক্ত চাপে থাকে। এছাড়াও ত্বকে য়দি ঘাম, প্রস্রাব, মল, মূত্র ইত্যাদি লেগে থাকে, তবে তা বেড শোরের ঝুঁকি বাড়ায়।
আরও পড়ুন :
প্লেটলেটের আকাল ফের শহরে, প্লেটলেট সংক্রান্ত এই তথ্যগুলি না জানলে বিপদ বাড়বে
শয্যাশায়ী রোগী বাড়িতে থাকলে কীভাবে যত্ন নেবেন - যাঁরা হুইলচেয়ারে আছেন বা শয্যাশায়ী তাঁদের বিশেষ ঝুঁকি রয়েছে। তাঁদের অন্তত প্রতি দু ঘণ্টায় ঘুরিয়ে শোয়াতে হবে বা স্থানান্তরিত করতে হবে।
- একপাশ থেকে চিৎ অবস্থা, তারপর অন্যপাশে ফেরাতে হবে সময়মতো
- যাঁদের একদিকে অপারেশন হয়েছে বা আঘাত রয়েছে, তাঁদের সেই পাশে ফেরানো যাবে না।
- যাঁদের দু পাশের কোনও পাশেই ফেরানো সম্ভব নয়, তাঁদের ক্ষেত্রে কী করতে হবে , তা বলে দেবেন হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররাই।
- রোগীকে ওয়াটার বেডে শোয়াতে হবে।
- যাঁদের অপুষ্টির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের প্রেসার ইনজুরি হওয়ার আশঙ্কা বেশি।