কলকাতা: পার্কিনসনস রোগের এখনও পর্যন্ত কোনও চিকিৎসা নেই। এই রোগে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। চিকিৎসকরা সেই উপসর্গগুলির চিকিৎসা করার চেষ্টা করেন। তাতে রোগ সারে না। তবে উপসর্গগুলি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই রোগের ওষুধ আবিষ্কারে জন্য় গবেষণা জারি রয়েছে সারা বিশ্বে। এবার তেমনই একটি গবেষণায় প্রাথমিকভাবে সাফল্য এল। আর সাফল্য এল আমাদের খুব পরিচিত একটি ধাতুর হাত ধরেই।


পার্কিনসনসের ওষুধে সোনা


পার্কিনসনসের ওই বিশেষ ওষুধটিতে সোনার ন্যানোপার্টিকল ব্য়বহার করা হয়েছে। ন্যানোপার্টিকল-এর অর্থ খুবই ক্ষুদ্র প্রায় চোখে দেখা যায় না এমন কণা। কেন ব্যবহার করা হয়েছে, তাও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই কণাগুলি রক্ত ও মস্তিষ্কের কোশগুলির মধ্যে দিয়ে চলাফেরা করতে পারে। এর ফলে বিভিন্ন নিউরোনগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে পারবে সেগুলি। যা পার্কিনসনস রোগে বিশেষভাবে জরুরি। তবে সোনার ন্যানোপার্টিকল বলতে আমরা যে সোনা বুঝি তা নয়। অর্থাৎ এটি গয়না তৈরির কাজে লাগে না। বরং বিশেষভাবে ওগুলি ওষুধ তৈরির জন্যই তৈরি করা। 


পার্কিনসনসে স্নায়ুর মধ্যে কী সমস্যা হয় ?


মস্তিষ্ক কোনও নির্দেশ দিলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ তা পালন করে। এই নির্দেশ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্নায়ুর মধ্যে দিয়ে মস্তিষ্ক থেকে ওই অঙ্গে গিয়ে পৌঁছায়। কিন্তু এরকম দুটি স্নায়ু কোশ বা নিউরোনের মাঝে কোনও বাধা থাকলে ওই নির্দেশ পৌঁছাতে পারে না। পার্কিনসনসে নিউরোনের মাঝে মাঝে এমন কিছু টক্সিন পদার্থ জমতে থাকে। যার ফলে ব্রেন থেকে নির্দেশ ঠিকভাবে পৌঁছায় না। 


এই নির্দেশ আসলে একটি শক্তি। এই শক্তিই মাথা থেকে অঙ্গে আসে। পার্কিনসনসে এই শক্তিটাই যায় কমে। শক্তি উৎপাদনের মূল উপাদান হল অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট বা এটিপি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এর ঘাটতি মেটাতে পারে নয়া ওষুধ সিএনএম-এইউ৮। 


কবে বাজারে উপলব্ধ হবে ?


বাজারে কবে থেকে ওই ওষুধ পাওয়া যাবে ? এই ব্যাপারে এখনও স্থিরতা দিতে পারছেন না গবেষকরা। কারণ সবেমাত্র ফেজ টু-এর ট্রায়াল শেষ হয়েছে। এতেই সাফল্য মিলেছে। কিন্তু এই ওষুধ রোজ ব্য়বহার করা যাবে কি না, কতটা করে ব্যবহার করতে হবে, তা নিয়ে এখনও ট্রায়াল বাকি। তা হয়ে গেলেই জানা যাবে ওষুধটির কার্যকারিতা। 


আরও পড়ুন - বাদুড়দের ‘বিরক্ত’ করলেই মহামারির বিপদ ?