নয়াদিল্লি: ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সারা দেশ। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তিলাভের দিনকে স্মরণ করবে দেশবাসী। জাতীয় পতাকা তুলে দেশের বীর শহিদদের জানানো হবে শ্রদ্ধা। জানেন কি, ইচ্ছেমতো তোলা যায় না জাতীয় পতাকা? তেরঙা তোলার রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম।


ভারতের তেরঙা জাতীয় পতাকার গুরুত্ব


ভারতের জাতীয় পতাকা কেবল কোনও রাষ্ট্রের পরিচিতি নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দেশবাসীর পরিচিতি ও আকাঙ্খা। এই জমির জন্য শহিদ হওয়া প্রতিটি ভারতবাসীর বলিদানের মর্যাদা জড়িয়ে রয়েছে জাতীয় পতাকার সঙ্গে। ভারতের বিশাল ভূখণ্ডে নানা জাতিকে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে এই জাতীয় পতাকা। তাই জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শনে মানতে হয় কিছু বিধি। 


জাতীয় পতাকা তোলার ক্ষেত্রে মানতেই হবে এই নিয়ম


ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে তৈরি বা হাতে বোনা খাদি সিল্ক/উল/তুলো দিয়ে তৈরি হওয়া উচিত। যাতে তিনটি আয়তক্ষেত্র থাকবে। ওপরে শোভা পাবে ত্যাগ ও বলিদানের প্রতীক গেরুয়া। মাঝের সাদা রঙের মধ্যে থাকবে ২৪টি কাটাবিশিষ্ট বৃত্তাকার চক্র। গেরুয়ার মতো নীচে থাকবে সবুজ রঙ।


আকারে অবশ্যই আয়তক্ষেত্রাকার হতে হবে জাতীয় পতাকাকে। দৈর্ঘ্য, প্রস্থে ৩:২ অনুপাতে তৈরি করতে হবে পতাকা।


সূর্যাস্তের পর পতাকা তুলে রাখা যায় না। সরকারি কোনও নির্দেশ না থাকলে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখতে নেই।


কোনওভাবেই পরিধান হিসাবে ব্যবহার করা যায় না জাতীয় পতাকা। কোনও পোশাক বা ইউনিফর্মে ব্যবহার করা যায় না ন্যাশনাল ফ্ল্যাগ।  


জাতীয় পতাকার ওপর কোনও ধরনের সুতোর কাজ বা লেখালিখি করা যায় না। রুমাল, বালিশের ওপর ব্যবহার করা যায় না তেরঙা পতাকা।


জাতীয় পতাকাকে টেবল ঢাকার কাপড় হিসাবে ব্যবহার করতে নেই। কোনও স্মৃতিসৌধ বা মূর্তি ঢাকতে নেই জাতীয় পতাকা দিয়ে।


জাতীয় পতাকা এমনভাবে তুলে রাখা উচিত যাতে ওড়ার সময় তা জমির ময়লা, কাদাজল স্পর্শ না করে।


কোনও কারণে জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে গেলে তা আর তোলা উচিত নয়। সেই ক্ষেত্রে যথাযোগ্য সম্মানের সঙ্গে তা পুড়িয়ে ফেলতে হয়।


 জাতীয় পতাকা তোলার সময় গেরুয়া যেন ওপরে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়।


১০ দেশে জাতীয় পতাকার সম মর্যাদা কোনও পতাকাই পায় না। তাই জাতীয় পতাকার পাশে একই উচ্চতায় কোনও পতাকা রাখতে নেই।


১১ অনেক সময় কাগজের ছোট পতাকা ব্যবহার করে দেশকে সম্মান প্রদর্শন করি আমরা। কিন্তু সেই ক্ষেত্রেও যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে সেই কাগজের পতাকা নষ্ট করতে হয়। যেখানে সেখানে ফেলে রাখতে নেই কাগজের পতাকা।


১২ জাতীয় পতাকা আসলে দেশবাসীর মর্যাদাকে তুলে ধরে। তাই কোনও গাড়ির ওপর বা গায়ে এই ফ্ল্যাগ জড়িয়ে রাখা যায় না।


১৩ আমাদের জাতীয় পতাকা দেশের সম্মানের প্রতীক। কেউ প্রকাশ্যে বা যেকোনও স্থানে পতাকা পোড়ালে, পদদলিত বা নষ্ট করলে তা আইনত অপরাধ হিসাবে গণ্যহবে। এখানেই শেষ নয়, কোনও ব্যক্তি জাতীয় পতাকাকে লিখিত বা মোখিকভাবে অসম্মান করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে। এই ক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জরিমানা ছাড়াও তিন বছরের কারাদণ্ডের আইন রয়েছে। 'Prevention of Insults to National Honour Act, 1971' অনুসারে ওই ব্যক্তির কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয়ই হতে  পারে।