পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : করোনা যখন তুঙ্গে, তখন মহামারীর সঙ্গে লড়াই করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।  আর এখন মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে কলকাতা পুরভোটের লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি। অজন্তা দাস (Ajanta Das)। 


কলকাতা পুরসভার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী (Left Candidates) । ছোট লালবাড়িতে নিজের জায়গা নিশ্চিত করতে আশীর্বাদ চেয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন। ৩০ বছরের অজন্তা দাস হাতে লাল পতাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন নিয়মিত প্রচারে। ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী বাড়ি বাড়ি গিয়ে সারছেন জনসংযোগ। রেড ভলান্টিয়ার অজন্তা দাস (KMC Election Red Volunteers)  জানাচ্ছেন, ' বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। আশীর্বাদ নিচ্ছি। এলাকার মেয়ে সবাই চেনেন। কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। কর্মীরাও সঙ্গে কাজ করছেন।' 


ছাত্রজীবন থেকেই SFI এর সঙ্গে যুক্ত নেতাজিনগর কলেজের এই স্নাতক। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন শিখর ছুঁয়েছিল, তখন মারণ ভাইরাসে আক্রান্তদের কাছে ওষুধ, খাবার, অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছেন অজন্তা। নিজেও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সমাজসেবার অভিজ্ঞতা নিয়ে পুরসভার জনপ্রতিনিধিত্বমূলক রাজনীতির লড়াইয়ে পা গলিয়েছেন। 

আরও পড়ুন :


পুরভোটে বামেদের ভরসা ৪৩ রেড ভলান্টিয়ার্স প্রার্থী, কী ভাবছে তরুণ-দল?




প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে টক্কর দিতে মুখিয়ে তিনি। চুটিয়ে  এসএফআই করতেন। দাবি করছেন, কাউন্সিলরকে এখানে কোভিডের সময় খুঁজে পাওয়া যায়নি। ছোটদের নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন দিবারাত্র। এবার পুরভোটে পার্টি তাঁকে যোগ্য মুখ মনে করেছে। 


১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী অজন্তা দাসের প্রচারে যে দেওয়াল লিখন হয়েছে, তাতে গুরুত্ব পাচ্ছে, ডেঙ্গি ও কোভিড মোকাবিলায় ওয়ার্ডে বিশেষ স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি, দুর্নীতিমুক্ত পুরপরিষেবা, এবং সংক্রান্ত দেওয়াল লিখন এবং কলকাতার সৌন্দর্যায়ন। চাঁচাছোলা অজন্তা বলছেন , লন্ডনের ভাঁওতা নয়, চাই সুন্দর কলকাতা। কাজের লম্বা তালিকার কথা বলছেন প্রচারে বেরিয়ে। বলছেন, কাটমানি- সমস্যার কথা, তাঁর দাবি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা নেই। শ্রমজীবী বাজার করতে হবে বলে মনে করছেন বাম-প্রার্থী। কর্মসংস্থান নিয়েও চিন্তা আছে। 


পাঁচ বছরের এক সন্তানের মা। বাড়িতে বয়স্ক শ্বশুর-শাশুড়ি। সবার দেখভালের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। তার মধ্যেও সময় বের করে নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছেন লাল ঝান্ডা। সকাল সকাল দলীয় কার্যালয় থেকে কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শুরু করছেন প্রচার। বিশ্বাস করেন, যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। চলছে নিরন্তর জনসংযোগ। 


ভোটের ময়দানে রেড ভলান্টিয়ার্সরা পুরভোটে স্ট্র্যাটেজি বামেদের।  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক,  ইমনকল্যাণ  লাহিড়ির মতে, এটা তো সামাজিক স্বীকৃতি, এদের কাজকে গোটা পৃথিবী স্বীকৃতি দিয়েছে। বামেদের কাছে, এছাড়া কোও বিকল্পও ছিল না। কী বলছেন বিরোধীরা ? তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ৩৪ বছরে যা হয়েছে, এসব দিয়ে কিছু হবে না।


বিধানসভা নির্বাচনের সময় ও একঝাঁক তরুণ ছাত্র-যুব নেতৃত্বকে প্রার্থী করেছিল বামপন্থীরা। কলকাতা পুরভোটে কি বাজিমাত করতে পারবেন রেড ভলান্টিয়ার্সরা? উত্তর মিলবে পুরভোটের ফল বেরনোর পর।