জয়পুর: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকাপাকিভাবে না গিয়ে যদি ভারতেই থেকে যেতেন, তাহলে তাঁর পক্ষে নোবেল পুরস্কার পাওয়া সম্ভব হত না বলে মনে করেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। জয়পুর সাহিত্য উৎসবে তিনি বলেছেন, ‘এমন নয় যে ভারতে প্রতিভা নেই। তবে একটি নির্দিষ্ট সিস্টেম দরকার। একজন ব্যক্তির পক্ষে এককভাবে নোবেল পুরস্কার পাওয়া সম্ভব নয়। আমি এমন অনেক কাজের জন্য কৃতিত্ব পেয়েছি, যা অন্যরা করেছেন।’


মুম্বইয়ে জন্ম হয় অভিজিতের। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পর বিদেশে চলে যান। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি লাভ করেন। এখন তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজির অধ্যাপক। নোবেল ছাড়াও তিনি আরও অনেক সম্মান পেয়েছেন। তাঁর মতে, ভারতে থাকলে সেটা সম্ভব হত না।

ভারতীয় অর্থনীতির বিষয়ে অভিজিৎ বলেছেন, ‘গত দু’মাস ধরে ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে কিছু ভাল লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তবে কতদিন এটা স্থায়ী হবে, সেটা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। কারণ, নতুন তথ্য আসছে। গত ৩০ বছরে ভারতে ব্যাপকভাবে দারিদ্র্য কমেছে। ১৯৯০ সালে দেশে দারিদ্র্য ছিল ৪০ শতাংশ। এখন তা ২০ শতাংশেরও কম। জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে। ফলে দারিদ্র্যের হার কমার সংখ্যা বিপুল।’

অভিজিৎ আরও বলেছেন, ‘ভারতে আরও ভাল বিরোধী দল দরকার। বিরোধীরাই গণতন্ত্রের হৃদয়। শাসক দলের আরও ভাল বিরোধী চাওয়া উচিত। ক্যান্সারের মতো দারিদ্র্যেরও অনেক সমস্যা আছে। অনেক রোগ আছে। কিছু মানুষ শিক্ষার দিক থেকে দরিদ্র, কেউ স্বাস্থ্যের দিক থেকে দরিদ্র, কেউ আবার সম্পদের দিক থেকে দরিদ্র। কীসের অভাব রয়েছে, সেটা দেখতে হবে। একবারেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। দরিদ্রদের হাতে সম্পদ দিতে হবে। সেটা হতে পারে একটি গরু বা ছাগল। এই সম্পদ দিয়ে ১০ বছর পরে দেখুন কী হয়। তাঁরা ২৫ শতাংশ বেশি সম্পদশালী, স্বাস্থ্যবান ও সুখী হয়ে উঠবেন। এর ফলে তাঁরা কঠোর পরিশ্রম করার বিষয়ে উৎসাহী হয়ে উঠবেন।’