নয়াদিল্লি: সীমান্ত নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই নতুন করে চিনের সঙ্গে সংঘাত। অরুণাচল প্রদেশের ৩০টি জায়গার নয়া নামকরণ করে চতুর্থ একটি তালিকা প্রকাশ করেছে চিন, যাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একাধিক জায়গা রয়েছে (Chinese Names for Arunachal Pradesh)। সেই নিয়েই নতুন করে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। চিনের ওই তালিকা প্রত্যাখ্যান করল দিল্লি। জানিয়ে দেওয়া হল, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অখণ্ড অংশ ছিল, আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে। (India China Conflict)
চতুর্থ যে তালিকা প্রকাশ করেছে চিন, তাতে অরুণাচলের ১২টি পাহাড়, চারটি নদী, একটি হ্রদ, একটি গিরিপথ, ১১টি বসতি এলাকা এবং একটি সমতল এলাকা রয়েছে। ওই ৩০টি জায়গার অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশও প্রকাশ করা হয়েছে, যেগুলিকে একটি নয়া মানচিত্রের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। রবিবার সেইটি প্রকাশ করে চিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস।
চিনের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, 'ভারতের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের একাধিক জায়গার নয়া নামকরণের চেষ্টা আগেও করেছে চিন। এই ধরনের প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করছি আমরা। নয়া নাম ঠিক করলেই সত্য পাল্টে যাবে না। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অখণ্ড অংশ ছিল, আছে এবং চিরকাল থাকবে'।
আরও পড়ুন: Sanjay Singh: আবগারি মামলায় ছ’মাস পর জামিন পেলেন AAP নেতা সঞ্জয়, বিরোধিতা করল না ED
এই প্রথম নয় যদিও, আগেও অরুণাচলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে নিজেদের বলে দাবি করে নয়া মানচিত্র প্রকাশ করে চিন। অরুণাচলের বেশ কিছু জায়গার নয়া নামকরণও করে তারা। ২০১৭ সালে প্রথম বার অরুণাচলের ছয় জায়গার নয়া নামকরণ করে তারা। এর পর ২০২১ সালে ১৫টি জায়গার নয়া নামকরণ করা হয়। ২০২৩ সালে আরও ১১টি জায়গার নয়া নামকরণ করে তালিকা প্রকাশ করা হয়।
আগাগোড়াই এই চিনা আগ্রাসনের বিরোধিতা করে এসেছে দিল্লি। সম্প্রতি সেই নিয়ে মুখ খোলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। তিনি বলেন, "আজ আমি আপনার বাড়ির নাম পাল্টে গিলেই কি সেটা আমার বাড়ি হয়ে যাবে? অরুণাচল প্রদেশ ভারতীয় রাজ্য ছিল, আছে এবং থাকবে। নাম পরিবর্তনের কোনও প্রভাব এতে পড়বে না।"
কিন্তু অরুণাচলের ৩০টি এলাকার নয়া নামের চতুর্থ যে তালিকা প্রকাশ করেছে চিন, তার সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ অতি সম্প্রতিই সেলা সুড়ঙ্গের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অরুণাচল সফর নিয়ে আপত্তি তোলে চিন। কূটনৈতিক মহলে মোদির সফর নিয়ে আপত্তি জানায় তারা। এমনকি আমেরিকার তরফে অরুণাচলকে ভারতের অংশ বলে যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তারও বিরোধিতা করে চিন। ভারত এবং চিনের সীমান্ত বিরোধে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ কাম্য নয় বলে জানিয়ে দেয় বেজিং। তার পরই চতুর্থ তালিকা প্রকাশিত হল।