নয়াদিল্লি: পানীয় জল থেকে খাবার, টান পড়েছে সবকিছুতে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে রাত কাটছে। বোমা-রকেটের ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যাচ্ছে দিনের বেলাতেও। সেই অবস্থায় লাশ জড়ো করে কাটছে গাজার বাসিন্দাদের। কিন্তু বোমা-গুলি বর্ষণের মধ্যে মর্গে দেহ নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। তাই আইসক্রিমের গাড়িতে ঠেসে পুরে দেওয়া হচ্ছে মৃতদেহ, যাতে পরে অন্তত শেষকৃত্যের সুযোগ পাওয়া যায়। (Israel Palestine War)
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের হামাসের মধ্যে। এই যুদ্ধে কার্যত ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে গাজা। শনিবারের পর, রবিবারও দিনভর সেখানে বোমা-রকেট বর্ষণ চলেছে। আর তার মধ্যেই, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে হাতড়ে-টেনে মৃতদেহ বের করে চলেছেন গাজার বাসিন্দারা। (Israel Palestine Conflict)
মৃতদেহ উদ্ধারে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্য আধিকারিকরাও। ইজরায়েলি রকেট হামলায় ছিন্নভিন্ন দেহগুলিকে জড়ো করছেন তাঁরা। কিন্তু এলাকার একটি কবরস্থানেও জায়গা খালি নেই। তাই একটির উপর একটি চাপিয়ে, মৃতদেহগুলিকে খালি পড়ে থাকা আইসক্রিমের গাড়িতে ঠেসে পুরে দেওয়া হচ্ছে।
গাজার আল-আকসা হাসপাতালের চিকিৎসক ইয়াসের আলি সংবাদমাধ্যমে বলেন, "হাসপাতালের মর্গে মাত্র ১০টি দেহ নেওয়া যাবে। উপায় না দেখে আইসক্রিমের কারখানা থেকে ফ্রিজার বের করে এনেছি আমরা, যাতে যুদ্ধে নিহত শহিদদের লাশ মজুত করে রাখা যায়।"
ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে আইসক্রিমের গাড়িগুলির বিজ্ঞাপনের ব্যানারে আইসক্রিম হাতে নিয়ে থাকা শিশুদের হাসিমুখ জ্বলজ্বল করছে। যুদ্ধের আগে পর্যন্ত ওই গাড়িতে চাপিয়েই সুপারমার্কেটে আইসক্রিম পৌঁছে দেওয়া হতো। তার পিছনে ছুটে যেতে দেখা যেত কচিকাঁচাদের। বর্তমানে ওই আইসক্রিমের গাড়িই অস্থায়ী মর্গে পরিণত হয়েছে।
শনিবারের পর রবিবারও গাজার বাসিন্দাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে সময় বরাদ্দ করে দেয় ইজরায়েলি বাহিনী। নইলে কেউ রক্ষা পাবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কিন্তু এখননও মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন স্থানীয় মানুষজন। তাঁদের দাবি, এমনিতেই মরণশীল অবস্থায় রয়েছেন তাঁরা। তাই আর মৃত্যুভয় নেই। এখনও পর্যন্ত যে হিসেব সামনে এসেছে, তাতে শুধুমাত্র গাজাতেই ২৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি প্যালেস্তিনীয় কর্তৃপক্ষের। আহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। ইজরায়েল জানিয়েছে, গাজা থেকে হামাসকে নিশ্চিহ্ন না করে দেওয়া পর্যন্ত, বোমাবর্ষণ চলবে। হামাসও এখনও পর্যন্ত যুঝে চলেছে। তাদের হানা আঘাতে ১৩০০ ইজরায়েলি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।