বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি: মণিপুর (Manipur Incident) নিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র (Centre)। '১৪ দিন ধরে পুলিশ কী করছিল? বিবস্ত্র করে ২ মহিলাকে হাঁটানোর ঘটনায় জিরো এফআইআর করতে ১৪ দিন কেন লাগল? ৪ মে-র ঘটনায় ১৮ মে এফআইআর কেন হল?' কেন্দ্রকে চাঁচাছোলা প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের। সঙ্গে পর্যবেক্ষণ, ভিডিওয় দেখা গিয়েছে পুলিশ নির্যাতিতাদের বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে তুলে দিয়েছে। এটি ভয়ঙ্কর।


আর যা...
সোমবার মণিপুরের ঘটনা নিয়ে শুনানি চলাকালীন বাংলার ভোট-হিংসার প্রসঙ্গ ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী বাঁশুরি স্বরাজ বলেন, 'বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের সময় মহিলাদের বিবস্ত্র করে অত্যাচার হয়েছে। রাজস্থানেও পিছিয়ে পড়া সমাজের মহিলাদের উপর নির্যাতন হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের উচিত দেশের প্রত্যেক মেয়েকে রক্ষা করা।' পত্রপাট কেন্দ্রের আইনজীবীর যুক্তি খারিজ করে দিন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি। বলেন, 'সর্বত্র মহিলাদের উপর একই ধরনের অত্যাচার চলছে, এই কথা বলে কোনও লাভ নেই। ...দেশের বাকি প্রান্তেও একই জিনিস ঘটছে এই যুক্তি দেখিয়ে মণিপুরের মতো ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। প্রশ্ন হল, এই ধরনের কী ভাবে মোকাবিলা সম্ভব? সেটি বলুন...নাকি আপনি বলতে চান, হয় দেশের প্রত্যেকটি মেয়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে না হলে কারওই সুরক্ষা-ব্যবস্থা করা যাবে না?' বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এও বলেন, 'মণিপুরের শুনানি চলছে, এখানে শুধু এই মামলাই শোনা হবে।' বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, 'ঘটনাটি ৩ মে-র। জিরো এফআইআর দায়ের হয়েছিল ১৮ মে। সংশ্লিষ্ট পুলিশ স্টেশনে এফআইআর স্থানান্তরিত হয় জুনে। গত ১৯ জুলাই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরই মামলা বিষয়টি শীর্ষ আদালতের নজরে আসে। তার পর থেকেই যতটুকু যা অগ্রগতি হয়েছে। 


কী ঘটেছিল?
প্রথমে গণধর্ষণ, তার পর সম্পূর্ণ নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটানো। এতেই শেষ নয়। নির্যাতিতারা যখন রেহাইয়ের আর্জি জানিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছেন, তখনও তাঁদের দেদার 'শ্লীলতাহানি' চলেছে। হিংসা-জর্জরিত মণিপুরে নারী-নিগ্রহের এমন ভিডিওই ভাইরাল হয়েছিল যা দেখে শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ ও রাজ্যের মুখ্য়সচিবকে তড়িঘড়ি ফোন করে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারির নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কিন্তু প্রশ্ন একটাই। গত কয়েক মাস ধরে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হওয়া সত্ত্বেও কড়া পদক্ষেপ কেন করা হয়নি? প্রসঙ্গত, ঘটনার ঠিক এক দিন আগে মেইতেই এবং কুকি জনজাতির মধ্য়ে সংঘর্ষে জ্বলে উঠেছিল মণিপুর। বস্তুত, মেইতেই-দের তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবি ঘিরে গত কয়েক মাস ধরেই হিংসা-জর্জরিত হয়ে রয়েছে উত্তরপূর্বের এই রাজ্য। কিন্তু তার পরও কেন হুঁশ নেই প্রশাসনের? প্রশ্ন, ক্ষোভ, বিতর্ক, দানা বেঁধেছে একের পর এক ঘটনা।


আরও পড়ুন:অভিষেকের ডাকা বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি বাতিল হাইকোর্টে