নয়াদিল্লি: চারবছর পুরনো মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সাজা হয়েছে দু'বছরের, আবার গিয়েছে সাংসদ পদও। সেই নিয়ে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত। সেই আবহেই সোমবার সুরত দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশকে সেখানে চ্যালেঞ্জ জানাতে চলেছেন রাহুল। আপাতত সাজার নির্দেশে স্থগিতাদেশের জন্য আবেদন জানিয়েছেন রাহুল (Rahul Gandhi Defamation Case)।


লোকসভা সেক্রেট্যারিয়টের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক


আপাতত ৩০ দিনের জামিনে মুক্ত রয়েছেন রাহুল। উচ্চ আদালতে তার মধ্যে আবেদন জানাতে পারবেন কংগ্রেস নেতা। তবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাহুলের সাংসদপদ খারিজ হয়। লোকসভা সেক্রেট্যারিয়টের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে বুলেট ট্রেনের গতিতে রাহুলের সদস্যতা খারিজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। 


দায়রা আদালত ছাড়াও উচ্চ আদালতে যাওয়ার উপায় রয়েছে রাহুলের কাছে। কিন্তু সেখানেও যদি তাঁর সাজায় স্থগিতাদেশ না আসে, সে ক্ষেত্রে আগামী আগামী আট বছর নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না রাহুল। ওয়েনাডে তাঁর জেতা আসনে উপ নির্বাচন করাতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। তবে কংগ্রেসের তরফে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা আগেই জানানো হয়েছিল।


আরও পড়ুন: Narendra Modi : বন্দে ভারতের উদ্বোধনে কংগ্রেসকে 'এপ্রিল ফুল' খোঁচা নরেন্দ্র মোদির


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে রাহুলের একটি মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। একটি সভায় দুর্নীতিগ্রস্ত ললিত মোদি, নীরব মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করে রাহুল। এই সব দুর্নীতিগ্রস্তদের পদবী মোদি কেন, প্রশ্ন করেছিলেন রাহুল। তাতেই তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদি। রাহুল সব মোদি পদবীর অধিকারীদের অপমান করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।


অপরাধমূলক মানহানির মামলা দায়ের হয়েছিল রাহুলের বিরুদ্ধে। সে ক্ষেত্রে দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ দু'বছর সাজা হয়। আর ভারতীয় জনপ্রতিনিধিত্ব আইন বলছে, কোনও জনপ্রতিনিধি যদি দোষী সাব্যস্ত হন সেক্ষ্তের পদ হারাবেন তিনি এবং ছ'বছর ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। যদিও রাহুলের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মানহানি মামলার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ যাঁদের নাম উল্লেখ করেছেন, তাঁদের কেউ এই মামলা দায়ের করেননি। সর্বোচ্চ সাজা নিয়েও মতভেদ রয়েছে আইনজীবীদের মধ্যে। 


লোকসভা থেকে বার করে দিতেই চক্রান্ত! অভিযোগ রাহুলের


নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে যদিও রাজি হননি রাহুল। তাঁর অভিযোগ, সংসদে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ওঠা কারচুপি এবং জালিয়াতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। সরকারি বিধি ভেঙে আদানিকে একের পর এক বরাত পাইয়ে দেওয়া, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাই পরবর্তী ভাষণে তিনি কী বলবেন, তা নিয়ে আতঙ্কে ছিল সরকার। সেই কারণেই কৌশলে তাঁকে লোকসভা থেকে বার করে দিতে এই মামলাকে ব্যবহার করা হয়েছে।